আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে বাংলাদেশকে ঘিরে আন্তর্জাতিক আগ্রহ বেড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেখানে দেশের নির্বাচন, সংস্কার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বার্তা বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ম্যানহাটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সরকার ইতিমধ্যে নানা সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, “আস্থাহীনতা ও রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে—এবার জাতিসংঘে সেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা।”
বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠক
অধ্যাপক ইউনূস এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানমসহ একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল—বাংলাদেশের নির্বাচন, স্বাস্থ্যবিমা সম্প্রসারণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, ডিজিটাল উদ্ভাবন এবং রোহিঙ্গা সংকট।
প্যারিসের মেয়র অ্যানি হিদালগোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের নতুন সূচনা হবে।” আলোচনায় সামাজিক ব্যবসা, নারী নেতৃত্ব ও রোহিঙ্গা ইস্যুও স্থান পায়।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গার সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস জানান, অতীতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। তিনি বলেন, এ অর্থ ফেরত আনা গেলে দেশের উন্নয়ন ও সামাজিক খাতে তা ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
এলডিসি থেকে উত্তরণে সহযোগিতা চাইলো বাংলাদেশ
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. এনগজি অকোনজো-ইওয়েলার সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। তবে এ সময় বাণিজ্য সুবিধা হারানোর আশঙ্কা থাকায় ডব্লিউটিওর সহায়তা অপরিহার্য। পোশাক খাতকে বৈচিত্র্যময় করা এবং বাণিজ্য সুবিধা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সমর্থন জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্মাননা
নিউইয়র্কে থেয়ারওয়ার্ল্ড আয়োজিত বার্ষিক শিক্ষা ডিনারে প্রফেসর ইউনূসকে দেওয়া হয় ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’। দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও নারী ক্ষমতায়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
ট্রাম্পের সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন ড. ইউনূস। সেখানে তিনি ট্রাম্পকে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা, স্পেনের রাজা ফেলিপে ষষ্ঠসহ বিভিন্ন বিশ্বনেতার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন তিনি।