মতিন গাজী, যশোর: যশোরের অভয়নগরে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে জহিরুল ইসলাম বাবু (৩৬) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (০৬ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন টিপু এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৫ জুলাই দুপুরে জহিরুল ইসলাম বাবু তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বিথি (৩২) এবং দুই মেয়ে সুমাইয়া (৯) ও সাফিয়া (২)-কে নিয়ে অভয়নগর উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে বাবু তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এরপর তিনি মরদেহগুলো যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে চেঙ্গুটিয়া এলাকার একটি বাগানে ফেলে রাখেন। পরে বাবু নিজেই পুলিশের কাছে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানান এবং আত্মসমর্পণ করেন।
পরে নিহত বিথির বাবা মুজিবর রহমান এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, বিয়ের পর থেকেই বাবু যৌতুকসহ বিভিন্ন দাবিতে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
পুলিশের তদন্তে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয় এবং ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত জহিরুল ইসলাম বাবুকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর, জেলা জজ আদালত সৈয়দ সাবেরুল হক (সাবু) বলেন,”অভয়নগরের একটি লোমহর্ষক হত্যাকান্ড। যিনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তাঁর নাম জহুরুল ইসলাম বাবু। উনি তাঁর স্ত্রীকে প্রথমে গামছা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে এবং পরবর্তী সময়ে যখন সন্তান দুটি চিৎকার করে পরবর্তী সময়ে দুই সন্তানকে একজনকে গলা টিপে আর একজনকে শ্বাসরুদ্ধ করে গামছা দিয়ে তিনি হত্যা করেছেন। এবং এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের আজকে যথার্থ বিচার হয়েছে এবং প্রকৃত যে অপরাধী, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে।”
