অর্ণব দাশ: ঐতিহ্যবাহী শোভাবাজার রাজবাড়ির নাটমন্দির সম্প্রতি সাক্ষী রইল এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার। আয়োজনের নাম ছিল “প্রতিফলিত শক্তি”, যেখানে নৃত্য, সঙ্গীত এবং নারীত্বের শক্তি মিলেমিশে তৈরি করল এক অনন্য আবহ।
সন্ধ্যার মূল আকর্ষণ ছিল অনুরেখা ঘোষ নৃত্য সংস্থা পরিবেশিত “লাল বিন্দি”। এই প্রযোজনায় নারীর অন্তর্নিহিত শক্তি, আত্মত্যাগ এবং ঐশ্বরিক রূপকে প্রতীকীভাবে তুলে ধরা হয়। কথক, সমসাময়িক নৃত্য, মার্শাল আর্ট ও ভিজ্যুয়াল প্রজেকশনের সমন্বয়ে সাজানো এই অভিনব পরিবেশনায় অংশ নেন সংস্থার ৩২ জন শিল্পী। প্রযোজনার নৃত্যপরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন অনুরেখা ঘোষ।
অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রিয়স্মিতা ঘোষের ভক্তিমূলক সঙ্গীতে। এরপর ওড়িশি নৃত্যের আবহ, অনিশা মণ্ডলের “দুর্গা ধ্যান মন্ত্র” এবং অকলান্তা মজুমদারের পরিবেশনা দর্শকদের বিশেষভাবে মুগ্ধ করে।
সন্ধ্যার সংগীতায়োজন ছিল বৈচিত্র্যময়। রেকর্ডেড ট্র্যাকের পাশাপাশি লাইভ পারফরম্যান্সে সরোদে সুনন্দ মুখার্জি, তবলায় সুবীর ঠাকুর ও প্রতীক মুখার্জি, কীবোর্ডে বিকাশ সাধুখান, পারকাশনে শুভাশিস সরকার এবং কণ্ঠে প্রিয়স্মিতা ঘোষ পরিবেশনায় প্রাণ সঞ্চার করেন।
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আরও উপস্থাপিত হয় সেজুতি গুহ রায়-এর “সুভ্র শঙ্খ রব”, অলোকপর্ণা গুহর নৃত্যসংস্থা “স্পিক আউট”, এবং বিদুষী দুর্গা আর্যের শক্তিশালী কথ্থক পরিবেশনা।
শেষাংশে নাটমন্দিরের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয় অনুরেখা ঘোষ নৃত্য সংস্থার শিল্পী ও সহযোগীদের পাশাপাশি বিদুষী দুর্গা আর্য, পলি গুহ, রিনা জানা, অলোকপর্ণা গুহ, সুনন্দ মুখার্জি ও প্রিয়স্মিতা ঘোষসহ একাধিক বিশিষ্ট শিল্পীকে।
“প্রতিফলিত শক্তি” শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, বরং নারীশক্তির এক প্রাণময় উদযাপন হয়ে থেকে গেল কলকাতার দর্শকমনে।