জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পূর্ব নাশকতা মামলা পরবর্তীতে ছাত্র হত্যা মামলা, নেপথ্যে জমি নিয়ে বিরোধ 

জাতীয়

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একই ব্যক্তিদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পূর্বে নাশকতা মামলা এবং ছাত্র আন্দোলনের পর ছাত্র হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার আদিতমারী উপজেলার উত্তর গোবধা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। আসামীরা হলেন, ওই এলাকার, আতিয়ার রহমান, মতিয়ার রহমান ও ফজলে রাব্বি।

জানাগেছে, উত্তর গোবধা এলাকার আব্দুল ছালাম ৬২ রেকর্ড এর পর একই এলাকার আছিয়া বেগম এর নিকট থেকে ১৭৪ শতক জমি ক্রয় করে ভোগদখল করে আসছেন। যাহার মৌজা- উত্তর গোবধা, বি আর এস খতিয়ান নং- ২১৫০, বি আর এস দাগ নং- ১১০১। কিন্ত আছিয়া বেগম এর ছেলে দলিল উদ্দিন একটি ভুয়া জাল দলিল তৈরী করে তার মা আছিয়া বেগম এর সেই বিক্রিত জমি অবৈধভাবে দাবী করে মামলা দায়ের করে। সেই মামলা নিম্ন আদালতে খারিজ হয়। পরে উচ্চ আদালতে আপীল করলে সেখানেও খারিজাদেশ বহাল থাকে। এছাড়া ওই ক্রয়কৃত সম্পত্তির ১০ শতক জমিতে দলিল উদ্দিনের বসতবাড়ি থাকায় সহকারী জজ আদালতে অন্য-৬৫/২০১৫ নম্বর উচ্ছেদের মামলা করেন আব্দুল ছালাম।

এদিকে পূর্বের ন্যায়  আব্দুল ছালাম ওই জমিতে চাষাবাদের উদ্দেশ্যে হাল চাষ করতে গেলে জমি বিক্রেতা আছিয়ার ছেলে দলিল উদ্দিন দলে বলে বাধা দিলে হাতাহাতি হয়। এসময় হাতাহাতির ঘটনাকে পুঁজি করে কৌশলে দলিল উদ্দিন তাঁর মাকে হত্যা করে  আব্দুল ছালাম ও তার পরিবারের লোকজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরো অভিযোগ উঠেছে, দলিল উদ্দিন তার মাকে হত্যা করে আব্দুল ছালাম ও তার পরিবারের নামে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। পরে ভয় পেয়ে  স্থানীয় আদিতমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি থানা থেকে তদন্ত করা হয়। এর কয়েকদিন পরেই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

ওই  জমিতে পুনরায় হাল চাষের জন্য গেলে দলিল উদ্দিন বাশেঁর লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আব্দুল ছালাম ও তার পরিবারের লোকজনদের উপর আকষ্মিক ভাবে হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় দলিল উদ্দিন এর ছেলে আরিফুল ইসলাম দলিল উদ্দিনের শয্যাশায়ী বয়োবৃদ্ধ মা আছিয়া বেগম কে ঘারে করে নিয়ে তাহাদের বসতবাড়ীর পিছনে পানি থাকা জমিতে ফেলে দেয়। কিন্ত পানিতে পড়ে আছিয়ার মৃত্যু না হওয়ায় উচুঁতে উঠানোর পরে তাকে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। যে আঘাতের কথা লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করে পুলিশ।

এদিকে গত শনিবার দুপুরে বৃদ্ধ আছিয়া হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় আনার দাবীতে মানববন্ধন করেন আব্দুল ছালামের পরিবার।
অপরদিকে ওই জমি নিয়ে সমাধনের লক্ষ্যে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে তাদেরকে মামলায় ফাসানোর হুমকি দেয়া হয়।  কয়েকদিন পর আব্দুল ছালাম এর ভাই, আতিয়ার, মতিয়ার ও ফজলে রাব্বিদের নাম জুলাই অভ্যুথানে ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ডে ভাটারা থানাধীন ছাত্র হত্যা মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কিন্তু তারা বিগত সরকারের আমলে  শিবির ট্যাগে আ’লীগের করা নাশকতা মামলায় জেল খেটেছেন ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *