বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজীতে অতিষ্ট গাড়ির মালিক ও চালকরা

অপরাধ

রকসী সিকদার, চট্টগ্রাম: বার আউলিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ঢাকা চট্টগ্রাম মহা সড়কে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। রাতে ছাড়াও দিনে চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সড়কে চলাচলকারী চালকরা।

নির্ভরযোগ্যসূত্রে জানা যায়, রাতের বেলায় পণ্যবাহী ট্রাক, ডাম্প ট্রাক, সিএনজি, মাইক্রো সহ বিভিন্ন গাড়ি আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। প্রতিদিন এভাবে বৈধ কাগজপত্র না থাকার অভিযোগ তুলে গাড়িগুলোর মালিক ও চালকদের মামলার ভয় দেখিয়ে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন তাঁরা। এতে নিরুপায় হয়ে চালকরা টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

এই মহা সড়কে নিয়মিত যাতায়াত করা ট্রাক চালক ফরিদ আহামদ বলেন, “আমি প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন মালামাল নিয়ে শহরে যাই। কিন্তু বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ আমার মতো শত শত চালক।”

রাতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ঢোকার পথে হাইওয়ে পুলিশ, “ট্রাফিক পুলিশ সবাইকে সড়কে চাঁদা দিতে হয়। একাধিক পয়েন্টে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায় করে পুলিশ। চাঁদা দিতে অপারগ হলে গাড়ি আটক করে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হয়। গাড়ি আটক করলেও মামলা না দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন পরিবহন দালালদের মধ্যস্ততায় টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় গাড়ি।”

স্থানীয় সিএনজি চালক বশর বলেন, “হাইওয়ে থানার ওসি মমিন যোগদান করার পর থেকেই হয়রানি আর চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হাইওয়ে থানা পুলিশ। ওসির নির্দেশনায় বার আউলিয়া হাইওয়ে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে একাধিক পুলিশ সদস্য চালকদের জিম্মি করে প্রতিনিয়ত চাঁদা আদায় করছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছি আমরা। শুনেছি বর্তমান হাইওয়ে থানার ওসি বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত থাকা অবস্থায় অনিয়ম দুর্নীতি করে টাকার পাহাড় বানিয়েছে । বিভিন্ন দলের নেতাদের সাথেও তার সম্পর্ক থাকার কথা শোনা যায়। ফলে চাঁদাবাজি করলেও তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নেতা অভিযোগ করে বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ চাঁদাবাজির কারণে অনেকে পরিবহন ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। সব কাগজ পত্র ঠিক থাকলেও চাঁদা না পেলে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে। পরিবহন শ্রমিক নামধারী কিছু দালালদের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশ এসব চাঁদাবাজি করছে বলে আমাদের কাছে প্রায় অভিযোগ আসে।”

এ বিষয়ে বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মবিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা কোন ধরনের চেকপোস্ট বসাই না। আমার সহকর্মীরা কেউ বেআইনি কাজে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার শাহিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এধরণের কাজে কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এইসব বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।”

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *