বায়োটেকনোলজি নির্ভর ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশ: শিক্ষা উপদেষ্টা

সারাদেশ

ভোরের দূত ডেস্ক: স্বাস্থ্য, কৃষি ও পরিবেশের টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশকে বায়োটেকনোলজি নির্ভর ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।

শুক্রবার রাজধানীতে শুরু হওয়া ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও কৃষি বিষয়ক বায়োটেকনোলজি সম্মেলন (আইসিবিএইচএ ২০২৫)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশ বায়োটেকনোলজিস্টস (জিএনওবিবি) এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এই দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।

অধ্যাপক আবরার তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, “আমরা বায়োটেকনোলজি বিপ্লবের দোরগোড়ায় আছি। এখনই এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।” তিনি সতর্ক করে জানান যে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবক্ষয় স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতে কার্যকর সমাধান দিতে পারে বায়োটেকনোলজি।

তিনি আন্তঃসম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “আমরা কৃষিকে বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা কল্পনা করতে পারি না, আবার পরিবেশগত স্থায়িত্ব ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তার কথাও ভাবা যায় না। এই আন্তঃসম্পর্কই আমাদের পথ দেখাবে।”

ড. আবরার বাংলাদেশের বায়োটেকনোলজির অর্জনের উদাহরণ তুলে ধরেন: উচ্চফলনশীল ও সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন, স্থানীয়ভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট উৎপাদন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোবিয়াল প্রযুক্তির ব্যবহার

তিনি বলেন, “এসব দৃষ্টান্ত আমাদের আরও দূর এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে শিক্ষা উপদেষ্টা দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেন: ১. জাতীয় বায়োটেক উদ্ভাবন ইনস্টিটিউট: দেশীয় ও প্রবাসী বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে এই প্রতিষ্ঠান একাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করবে। এর লক্ষ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বায়োটেক হাবে রূপান্তর করা। ২. জাতীয় বায়োটেক ডেটা ব্যাংক: ক্লিনিক্যাল রেকর্ড থেকে শুরু করে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জিনোম তথ্য পর্যন্ত মানসম্মত ডেটা সংরক্ষণের জন্য এই ডেটা ব্যাংক গঠনের আহ্বান জানান তিনি।

উপদেষ্টা আবরার এই সম্মেলনকে শুধু বিজ্ঞানীদের সমাবেশ নয়, বরং সরকার, একাডেমিয়া, শিল্প ও নাগরিক সমাজসহ সব অংশীজনের জন্য একটি ‘আহবান’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “বিজ্ঞানকে ভালো শাসনব্যবস্থা, উদ্ভাবনকে অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিকে প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে।”

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো ‘পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ ও টেকসই স্বাস্থ্য ও কৃষির জন্য প্রতিকার।’ এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে জিএনওবিবি তাদের বৈশ্বিক কার্যক্রমের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। মাল্টিমিডিয়া গ্রুপ বাংলাদেশের সিইও আব্দুল আউয়াল মিন্টু অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *