স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলেছে ভুয়া এনআইডি ও পাসপোর্ট সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধভাবে সংগৃহীত জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করছে। এ কাজে পাসপোর্ট অফিসের ভেতরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—রোহিঙ্গা, বিদেশি অপরাধী ও রাষ্ট্রবিরোধী চক্রের সদস্যরা এই ফাঁকফোকর ব্যবহার করে বৈধ বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে পরিচয় নিচ্ছে। অনেক সাধারণ মানুষ নিজের অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইতোমধ্যেই এমন অভিযোগ উঠেছে যে, অনেকের বৈধ এনআইডি ব্যবহার করে অন্য কেউ পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছে।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত:
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জালিয়াতির মূল কারণ পাসপোর্ট আবেদনে লাইভ বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের অভাব। সিম নিবন্ধনের সময় যেমন লাইভ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও মুখের বায়োমেট্রিক বাধ্যতামূলক, পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় তা না থাকায় দুর্নীতিবাজ চক্র এ সুযোগ নিচ্ছে।
জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি:
ভুয়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে কোনো আন্তর্জাতিক অপরাধ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটলে তার দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে অপরাধীরা পরিচয় গোপন করে সহজে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে, যা আইনশৃঙ্খলার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
করণীয় ও প্রস্তাবনা:
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে অবিলম্বে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
পাসপোর্ট আবেদনে এনআইডির সঙ্গে লাইভ বায়োমেট্রিক যাচাই বাধ্যতামূলক করা।
পাসপোর্ট অফিসের ভেতরের জালিয়াত চক্র চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া।
ভুয়া পাসপোর্ট চক্রের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রযুক্তি ও নজরদারি আরও শক্তিশালী করা।
নাগরিকদের এনআইডি সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
জাতীয় সংকট:
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আর শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়; বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য এক ভয়াবহ সংকট। দ্রুততম সময়ে সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এর ভয়াবহতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে