দেলোয়ার হোসাইন মাহদী, (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুরে কলেজছাত্রী ফারজানা আক্তার জুঁই হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এ সময় জুঁই হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় লাউর ফতেহপুর ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ কলেজের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন জুঁইয়ের সহপাঠী ও কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— “আমরা বিচার চাই”, “জুঁই হত্যার বিচার চাই”, “হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই” — এমন নানা স্লোগান।
উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থী ফাহাদ, মুক্তা আক্তার, মরিয়ম আক্তারসহ অনেকেই বলেন, “একজন মেয়ে ঘর থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর পুকুরে লাশ পাওয়া—এটা স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। জুঁই আমাদের গর্ব ছিল, তার স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষা অর্জনের। সেই স্বপ্ন নির্মমভাবে থেমে গেছে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা ন্যায়বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা আরও বড় আন্দোলনে যাব।”
অত্র কলেজের অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন বলেন, “জুঁই অত্যন্ত ভদ্র ও মেধাবী ছাত্রী ছিল। তার এই পরিণতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
নিহতের বাবা আবু হাসনাত রানা বলেন, “আমার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা অনেক খোঁজ করেছি। অবশেষে পুকুরে তার লাশ পাওয়া যায়। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মামলা করেছি। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীদের শাস্তি চাই—এটাই আমার একমাত্র দাবি।”
এর আগে গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফারজানা আক্তার জুঁই (১৮) নিজ ঘর থেকে নিখোঁজ হন। পরিবার ও স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অবশেষে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে স্থানীয় এক ব্যক্তি কচুরিপানা তুলতে গিয়ে ভাসমান একটি লাশ দেখতে পান।
পরে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে এবং পরিবারের সদস্যরা সেটি জুঁইয়ের লাশ বলে শনাক্ত করেন।
এলাকাবাসী, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা দ্রুত হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।