হাফেজে কোরআন হলেন আশরাফ আলী : এক আলোকিত পরিবারের গর্বিত অর্জন

ধর্ম সারাদেশ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ গ্রামের এক আলোকিত পরিবারের সন্তান মোঃ আশরাফ আলী সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করে হাফেজে কোরআন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। তিনি বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকার দারুল মাজীদ মাহমুদিয়া মাদরাসা থেকে হিফজুল কোরআন সফলভাবে সম্পন্ন করেন।

বর্তমানে তার বয়স মাত্র ১২ বছর। আশরাফ আলী প্রায় দুই বছরে পবিত্র কুরআন শরীফ হিফজ সম্পন্ন করেছেন, যা তার অগাধ স্মরণশক্তি, অধ্যবসায় ও মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের নিদর্শন। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সে বড়। তার একটি ছোট বোন রয়েছে, নাম সালমা রহমান সেজদা, বয়স মাত্র এক বছর।

তার পিতা মাওলানা, মুফতি মোঃ মাহবুবুর রহমান কওমি মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস (সমমান মাস্টার্স) সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকা আলিয়া মাদরাসা থেকে হাদিস বিভাগে মাস্টার্স এবং ফিকাহ বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

তিনি ডেমরা ল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এলএলবি সম্পন্ন করে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে জুনিয়র আইনজীবী হিসেবে আইনচর্চা করছেন। পাশাপাশি তিনি ডিপ্লোমা ইন মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি সম্পন্ন করেছেন এবং একজন নিবন্ধিত ফার্মাসিস্ট।

তিনি একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক ও শিক্ষা সংগঠক, বর্তমানে দারুল নাজির মাহমুদিয়া মাদরাসার শিক্ষক এবং আইডিয়াল ইসলামিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক (প্রিন্সিপাল)। তিনি একজন ইমাম ও খতিব, সফল ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবক হিসেবেও সুপরিচিত।

তাছাড়া তিনি সাংবাদিকতাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের একজন সম্মানিত দায়িত্বশীল সদস্য,
দৈনিক ঘোষণা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এবং
দৈনিক দিন প্রতিদিন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকতা, শিক্ষা ও সমাজসেবার সম্মিলিত ভূমিকার মাধ্যমে তিনি এলাকায় একজন আদর্শিক নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত।

ছেলের অর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমি চাই আমার সন্তান সম্পদে নয়, বরং জ্ঞানে গরীয়ান হোক। সে যেন জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিক গুণে গুণান্বিত হয়ে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। অর্থ নয়, বরং জ্ঞান, নীতি ও মানবতা যেন তার জীবনের মূল চালিকাশক্তি হয়।”

দারুল মাজীদ মাহমুদিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মাহমুদুল হাসান বলেন,
“আশরাফ আলী একজন শান্তশিষ্ট, মনোযোগী ও ধার্মিক ছাত্র। তার হিফজ সম্পন্ন হওয়ায় আমরা গর্বিত। আমরা দোয়া করি, সে যেন ইসলামের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত করে এবং সাধারণ শিক্ষায়ও নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলে।”

আশরাফ আলীর এই কৃতিত্ব তার পরিবার, মাদরাসা, এলাকা এবং পুরো সমাজের জন্যই এক অনন্য গৌরবের বিষয়। তার জন্য দোয়া করা হচ্ছে, তিনি যেন হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি হওয়ার পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষায়ও শিক্ষিত হয়ে দেশের একজন আদর্শ, মানবিক ও আলোকিত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *