চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড: সাবেক তিন মন্ত্রীসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত শহীদুল ইসলাম শহীদ হত্যা মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ মোট ২৩১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মামলাটির বিচার শুরুর আদেশ দেন। এটি এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রথম চার্জশিট গৃহীত হওয়া ঘটনা।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, মামলার বাদী শহীদুলের ভাই শফিকুল ইসলাম চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন এবং তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করেন।

এর আগে, ৩০ জুলাই চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফয়সাল মামলাটির চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। চার্জশিটে মোট ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

কী ঘটেছিল সেই দিন?

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট, চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, পিস্তল, শটগান ও ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হন শহীদুল ইসলাম শহীদ। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিহত শহীদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।

উল্লেখযোগ্য আসামিরা

চার্জশিটভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—
সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আ জ ম নাছির উদ্দীন, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু, আব্দুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন, নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন, এবং নুরুল আজিম রনি।

মামলাটি বর্তমানে বিচারিক পর্যায়ে রয়েছে এবং চার্জশিট গৃহীত হওয়ায় শিগগিরই শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।