অনলাইন ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালীন প্রার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে এবং একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ তুলেছেন।
ছাত্রদল, শিবির ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ
- ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল: ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান অভিযোগ করেন যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, শিবিরের সাবেক নেতারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করে প্রভাব বিস্তার করছেন। এমনকি শিবিরের সাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নিয়মবহির্ভূতভাবে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন এবং সকালে একটি হলে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাকে ঠেকিয়ে দেন। এসব ক্ষেত্রে প্রশাসন নীরব রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
- ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল: ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ আদিব জানান, নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যালট পেপার এনেছে, যা সন্দেহজনক। তিনি বলেন, সালাম-বরকত হলে ২৯৯ জন ভোটারের জন্য ৪০০টি ব্যালট পেপার আনা হয়েছে। এছাড়া, তাদের পোলিং এজেন্টদের অনেক কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, যারা ডোপ টেস্ট করেননি, তাদের নামও ভোটার তালিকায় রয়েছে। আদিব বলেন, সাবেক ছাত্ররা হলে অবস্থান করছেন এবং প্রশাসন কোনো বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
- স্বতন্ত্র প্রার্থী: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের ভিপি প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু অভিযোগ করেন, ভোটারদের আঙুলে যে অমোচনীয় কালি দেওয়ার কথা, তা সব হলে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ দলকে সমর্থন করার অভিযোগ তোলেন।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য
নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি ভোটকেন্দ্রে ২১ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা এবং ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং অন্তত ৮০টি সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তারা বলেন, ভোটগ্রহণে কোনো ধরনের অনিয়ম বা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। জাকসু নির্বাচনে মোট ২৫টি পদে ১৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রার্থী রয়েছেন।