ভোরের দূত প্রতিবেদক: ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজকে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’তে রূপান্তরের প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর পরিবর্তে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে কলেজগুলোকে অধিভুক্ত কাঠামোর আওতায় রাখা উচিত। এই দাবিতে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম লিখিত বক্তব্যে জানান, ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কবি নজরুল সরকারি কলেজসহ সাত কলেজ দীর্ঘদিন ধরে সুলভ ব্যয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়ে আসছে। প্রস্তাবিত নতুন কাঠামো কার্যকর হলে শিক্ষার মান কমবে, নারীশিক্ষা হুমকির মুখে পড়বে এবং শতবর্ষী ঐতিহ্য ধ্বংস হবে।
শিক্ষকরা বলেন, রাজধানীর দক্ষিণ অংশের শিক্ষার্থীরা এসব কলেজের ওপর নির্ভরশীল। নতুন ব্যবস্থায় পড়াশোনার জন্য তাদের উত্তর ঢাকায় যেতে হলে যানজটে অতিরিক্ত ভোগান্তি তৈরি হবে। নারীশিক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে, বিশেষ করে ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজ সংকুচিত হলে অনেক মেয়েই উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন।
তাদের দাবি, নীতিগতভাবে জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ উচ্চশিক্ষা সম্প্রসারণ ও গবেষণা জোরদারের কথা বললেও প্রস্তাবিত পরিকল্পনা তার উল্টো। এতে শুধু শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, কর্মরত শিক্ষকদের প্রত্যাশাও পূরণ হবে না।
শিক্ষকেরা বলেন, জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে, পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় দুই দশক পরও প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নতুন প্রতিষ্ঠিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ও এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি।
তারা প্রস্তাব করেন, সাত কলেজকে কলেজিয়েট বা অধিভুক্ত কাঠামোর আওতায় রেখে পাঠদান ও প্রশাসনিক দায়িত্ব বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের হাতে থাকা উচিত। পাশাপাশি আধুনিক ল্যাব-গ্রন্থাগার, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণা বাজেট, আবাসন ও বৃত্তির সুযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।