ভোরের দূত প্রতিবেদক: নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী গ্রামে বিদেশ যাওয়ার নামে প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন জাফর শেখ। তার ছেলে শিমুল বর্তমানে সৌদি আরবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ ঘটনায় শিমুলের মা পারভীন বেগম মানবপাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।
গত ২৪ মে প্রবাস ফেরত প্রতিবেশী খাইরুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলামের প্রলোভনে পড়ে ৫ লাখ টাকা দিয়ে সৌদি আরব যান শিমুল। চুক্তি ছিল সরকারি স্ট্যাম্পে—আকামা ও চাকরি দেওয়া হবে, অন্যথায় পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু কোনো আকামা না পেয়ে মরুভূমিতে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
মোবাইলে পরিবারের সাথে যোগাযোগে শিমুল জানান, খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ছাড়াই অমানবিক নির্যাতনের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তার মা-বাবা ও স্ত্রী ভিডিও কলে এমন দৃশ্য দেখে ভেঙে পড়েন। ইতোমধ্যে একাধিকবার গ্রাম্য শালিস হলেও কোনো সমাধান মেলেনি। বরং অভিযুক্তরা আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করছে।
শিমুলের মা পারভীন বেগম জানান, সৌদি থেকে রাজন নামে এক ব্যক্তি মুক্তিপণের জন্য আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করেছে। টাকা না দিলে ছেলেকে ফেরত পাঠাবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। মামলা করার পরও পরিবার নিয়মিত হুমকি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
জাফর শেখ কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, টাকার অভাবে দুই মাস ধরে পরিবার শুধু আলুভর্তা দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। ছেলের কষ্টের কথা ভেবে পরিবারের সকলেই দিশেহারা।
এ ঘটনায় নড়াইলের আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা যশোর পিবিআইয়ের এসআই মহিদুল ইসলাম বলেন, তদন্ত চলছে, শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।
অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, শিমুলকে কাজ দেওয়া হয়েছিল। তবে আকামা ও চাকরির প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি।