অনলাইন ডেস্ক: ডায়াবেটিস রোগীদের সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি হলো যখন-তখন রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় হাইপারগ্লাইসেমিয়া। এটি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত জরুরি, নাহলে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
হাইপারগ্লাইসেমিয়ার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে মানসিক চাপ, অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, সংক্রমণ কিংবা ওষুধের অনিয়ম। দীর্ঘস্থায়ী অবস্থায় এটি ডায়াবেটিস কিটো-অ্যাসিডোসিসে পরিণত হতে পারে।
এই জটিলতার লক্ষণগুলো হলো— বমি, পেটব্যথা, গভীর শ্বাস, অতিরিক্ত মূত্রত্যাগ, দুর্বলতা, বিভ্রান্তি ও চেতনা হ্রাস। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এ অবস্থার ঝুঁকি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে শুরুতেই বেশি করে পানি পান করা জরুরি। শরীরে পানিশূন্যতা থাকলে রক্তে শর্করা আরও বেড়ে যায়। পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে বাড়তি গ্লুকোজ বের করে দিতেও সহায়তা করে।
একইসঙ্গে হালকা হাঁটা বা স্ট্রেচিং করলে শরীর শর্করা ব্যবহার করার সুযোগ পায়। দুর্বলতা না থাকলে প্রতিদিন এভাবে কিছুটা ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যায়।
প্রচলিত কিছু ঘরোয়া উপায়ও সাময়িকভাবে সহায়তা করতে পারে। যেমন—
রাতে ভিজিয়ে রাখা মেথি ভেজানো পানি সকালে পান করা।
করলা বা করলার রস গ্রহণ করা। গবেষণায় দেখা গেছে, করলায় থাকা পলিপেপটাইড-পি উপাদান ইনসুলিনের মতো কাজ করতে পারে। তবে খালি পেটে কাঁচা করলার রস না খাওয়াই ভালো।
অল্প পরিমাণ দারুচিনি গরম পানিতে ভিজিয়ে চা হিসেবে পান করা। এটি ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এসব ঘরোয়া উপায় স্থায়ী সমাধান নয়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে, বিশেষ করে বমি, মাথা ঘোরা বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিজে থেকে কখনো ওষুধ বা ইনসুলিন ব্যবহার করা উচিত নয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল উপায় হলো নিয়ম মেনে চলা। তাই নিয়মিত চেকআপ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনই রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রধান পথ।