ভোরের দূত ডেস্ক: প্রতিদিনের জীবনে আমরা নানা রকম ঝামেলা, দুশ্চিন্তা আর মানসিক চাপের ভেতর দিয়ে যাই। এর ফলে অশান্তি আমাদের মন দখল করে ফেলে। কিন্তু খুব সহজ কিছু অভ্যাস আমাদের এই অশান্তি অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলা এবং ভিড় থেকে কিছুটা দূরে সরে যাওয়া।
প্রথমত, যখন আমরা নিজের কাজে মনোযোগী হই, তখন আমাদের অযথা চিন্তার জায়গা কমে যায়। ব্যস্ততা অনেক সময় সমস্যার সমাধান না করলেও সমস্যার যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয়। কাজেই ব্যস্ত থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
দ্বিতীয়ত, সবসময় ভিড়ের মধ্যে থাকা মানেই নিরাপত্তা বা আনন্দ নয়। বরং অনেক সময় ভিড় আমাদের মানসিক অশান্তি বাড়িয়ে দেয়। অন্যের কথাবার্তা, সমালোচনা কিংবা তুলনা আমাদের মনে চাপ সৃষ্টি করে। তাই মাঝেমধ্যে একা থাকার অভ্যাস করা দরকার।
তৃতীয়ত, একা থাকা মানে একাকিত্ব নয়। বরং এটি নিজের সাথে নিজের সম্পর্ক গড়ার সুযোগ। এই সময়টুকুতে আমরা ভাবতে পারি—আমরা আসলে কী চাই, আমাদের সত্যিকারের প্রয়োজন কী।
চতুর্থত, যদি আমরা মনে করি যে “আমি কাউকেই চিনিনা”, তবে আশেপাশের মানুষ আর আমাদের জীবনের ওপর অতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। এই মানসিক কৌশল আমাদের ভেতরে অদ্ভুত এক শান্তি এনে দেয়।
পঞ্চমত, মানুষ সবসময় অন্যকে খুশি করতে গিয়ে নিজের ভেতরের ইচ্ছাগুলোকে চাপা দেয়। কিন্তু নিজের জীবনকে নিজের মতো করে গড়ে তুলতে চাইলে, অন্যদের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা জরুরি।
ষষ্ঠত, আমরা যত বেশি অন্যকে গুরুত্ব দিই, তত বেশি নিজেদের অবহেলা করি। অথচ নিজেদের যত্ন না নিলে ভেতরের শান্তি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। তাই আগে নিজের দিকে মনোযোগ দিতে শিখতে হবে।
সপ্তমত, প্রকৃত শান্তি বাইরের কোনো পরিবেশে নেই; সেটা লুকিয়ে আছে আমাদের ভেতরেই। ব্যস্ত থাকা, একা হওয়া আর মানসিক দূরত্ব তৈরি করার মাধ্যমে আমরা সেই শান্তিকে জাগিয়ে তুলতে পারি।
অষ্টমত, নিজের ব্যস্ততাকে এমন কিছু দিয়ে পূর্ণ করা উচিত যা আমাদের আনন্দ দেয়। সেটা হতে পারে বই পড়া, গান শোনা, লেখা, হাঁটাহাঁটি কিংবা যেকোনো সৃজনশীল কাজ। এগুলো মনকে সতেজ রাখে।
নবমত, অশান্তি যতই বড় হোক না কেন, সঠিক অভ্যাসের মাধ্যমে সেটাকে অনেকটাই কমানো সম্ভব। একটু একা থাকা, একটু ব্যস্ত থাকা—এমন সাধারণ কৌশলই মানসিক প্রশান্তির বড় উৎস।
দশমত, তাই জীবনে শান্তি খুঁজতে চাইলে আমাদের উচিত হবে অকারণ ভিড় থেকে কিছুটা সরে যাওয়া, নিজের কাজে মন দেওয়া এবং মানসিকভাবে হালকা থাকার চেষ্টা করা। তবেই ভেতরের অশান্তির অর্ধেকটাই মিলিয়ে যাবে।