মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে লালমনিরহাটে দুর্গাপূজা শুরু

জাতীয় ধর্ম

সোহাগ হোসেন শান্ত, লালমনিরহাট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মহাষষ্ঠীর অঞ্জলি ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে জেলায় শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পন্ন হওয়ার পর প্রতিটি পূজামণ্ডপে শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক পূজা-অর্চনা। কাঁসর-ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনিতে ভরে উঠেছে মণ্ডপগুলো। ভক্তরা ভক্তিভরে দেবী দুর্গার পূজায় নিমগ্ন হয়ে পালন করছেন নানা ধর্মীয় আচার।

পঞ্জিকা মতে, দুর্গোৎসব পাঁচ দিনব্যাপী মহোৎসব। গত ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চমী তিথিতে দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়। আজ রবিবার মহাষষ্ঠী দিয়ে শুরু হলো মূল উৎসব। আগামী সোমবার মহাসপ্তমী, মঙ্গলবার মহাষ্টমী, বুধবার মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসব।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর লালমনিরহাটে মোট ৪৬৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬২টি, আদিতমারীতে ১১৪টি, কালীগঞ্জে ৯১টি, হাতীবান্ধায় ৭২টি ও পাটগ্রামে ২৯টি পূজামণ্ডপ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা সদরের শ্রী গৌরিশংকর গোশালা সোসাইটি দুর্গা মন্দির, কালিবাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, কাচারীবাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরসহ বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা সাজসজ্জা ও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

বড়বাড়ী বাজার শিবকালী ও দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নিমাই চন্দ্র পাল জানান, ‘দুর্গাপূজার প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আশা করছি প্রশাসনের সহযোগিতায় নির্বিঘ্নেই পূজা সম্পন্ন হবে।’

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের জেলা সভাপতি গুরুচরণ রায় বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের সমন্বয়ে পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক হীরালাল রায় আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘মায়ের আশীর্বাদে এ বছর আরও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হবে।’

পূজা উপলক্ষে জেলায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিটি মণ্ডপে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, ‘দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সক্রিয় রয়েছেন।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘উৎসবকে ঘিরে সর্বস্তরের মানুষ আনন্দ ভাগাভাগি করছে। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে থেকে কাজ করছে।’

শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে লালমনিরহাট এখন উৎসবমুখর। আলো ঝলমলে সাজসজ্জা, বাহারি প্রতিমা আর ভক্তদের ভিড়ে প্রতিটি মণ্ডপ পরিণত হয়েছে মিলনমেলায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *