অনলাইন ডেস্ক:
স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বার্ষিক রক্ত পরীক্ষা শরীরে যেকোনো লুকানো সমস্যা আগে থেকেই সনাক্ত করতে সাহায্য করে। সব ধরনের পরীক্ষা নাও করলেও কিছু অপরিহার্য রক্ত পরীক্ষা আছে, যা স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বোঝার জন্য এবং প্রাথমিক রোগ সনাক্তকরণে সহায়ক।
সম্পূর্ণ রক্ত গণনা (CBC) হলো এমন একটি পরীক্ষা যা লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা, হিমোগ্লোবিন এবং প্লাটিলেটের মাত্রা নির্ধারণ করে। এটি রক্তাল্পতা, সংক্রমণ, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কিছু ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ সনাক্ত করতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা (ফাস্টিং গ্লুকোজ ও HbA1c) ডায়াবেটিস নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষার মাধ্যমে মোট কোলেস্টেরল, LDL, HDL এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা জানা যায়, যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্ধারণে সহায়ক। লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) লিভারের স্বাস্থ্য যাচাই করে, যেমন ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস এবং ওষুধ বা অ্যালকোহলজনিত ক্ষতি। কিডনি ফাংশন টেস্ট কিডনির কার্যকারিতা নির্ণয় করে, কারণ কিডনির রোগ প্রাথমিকভাবে ধরতে হলে সঠিক সময়ে পরীক্ষা প্রয়োজন।
থাইরয়েড প্রোফাইল (T3, T4, TSH) বিপাক, শক্তি এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি পরীক্ষা হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য, আর ঘাটতি হলে ক্লান্তি ও হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। ভিটামিন B12 স্নায়ু, স্মৃতি এবং লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, ঘাটতি হলে ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব এবং দীর্ঘমেয়াদী স্নায়বিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
ইলেক্ট্রোলাইট প্যানেল শরীরে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ক্লোরাইডের ভারসাম্য নির্ণয় করে, যা হাইড্রেশন, পেশির কার্যকারিতা এবং রক্তচাপে প্রভাব ফেলে। এছাড়া সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (CRP/ESR) শরীরে প্রদাহ বা সংক্রমণের উপস্থিতি বোঝায়। বেশি প্রদাহ থাকলে সংক্রমণ, অটোইমিউন রোগ বা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
সর্বোপরি, বছরে অন্তত একবার এই রক্ত পরীক্ষা করা স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হওয়া উচিত, যা গুরুতর সমস্যা তৈরি হওয়ার আগেই সনাক্ত করতে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করবে।