ইরানের ওপর ফের কঠোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর: আলোচনার দরজা খোলা রাখার ঘোষণা তেহরানের

আন্তর্জাতিক

ভোরের দূত ডেস্ক: ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রেক্ষিতে দেশটির ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ কার্যকর করা হচ্ছে। যদিও জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা (আইএইএ) শুক্রবার নিশ্চিত করেছে যে, ওয়াশিংটন ও ইসরায়েলের হামলার পর এক বিরতি শেষে তারা পুনরায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর পরিদর্শন শুরু করেছে। জাতিসংঘের এই নিষেধাজ্ঞাগুলো শনিবারের শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

শুক্রবার তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল স্থগিত করার জন্য বেইজিংয়ের সঙ্গে রাশিয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

মস্কো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করা বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও, তারা নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর নাও করতে পারে।

গত জুন মাসে ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলার পর ইরান যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর পর ইউরোপীয় শক্তিগুলো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করে।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা (আইএইএ) শুক্রবার নিশ্চিত করেছে যে, ওয়াশিংটন ও ইসরায়েলের হামলার পর এবং এক বিরতির পর এই সপ্তাহে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর পরিদর্শন পুনরায় শুরু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএএ)’র পরিদর্শন পুনরায় শুরু করা ইউরোপীয় দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির প্রধান দাবি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, “আমি কায়রোতে সংস্থার সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি এবং সংস্থার মহাপরিচালক যথেষ্ট সন্তুষ্ট ও খুশি।” আরাঘচি জোর দিয়ে বলেছেন যে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের যেকোনও প্রচেষ্টা ‘আইনগতভাবে অকার্যকর’, তিনি তার পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর ‘চাপের কাছে কখনও নতি স্বীকার’ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তবে আরও আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে বলে জানান তিনি। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান শুক্রবার বলেছেন, তেহরান নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রতিক্রিয়ায় পরমাণু অস্ত্র না বানানোর জন্য পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে না। জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড বলেছেন, ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো এই সপ্তাহান্তে আবার আরোপ করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি, যাতে তার পরমাণু কর্মসূচির আন্তর্জাতিক উদ্বেগগুলো সমাধান করা যায়। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা অপসারণের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো শনিবারের শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। ফ্রান্সের জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত জেরোম বন্নাফোর্ট পরিষদে বলেন, সব পক্ষ এখনও পর্যন্ত, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত, একটি সমাধান খুঁজতে চেষ্টা করেছে।

আরাঘচি বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।

তিনি দাবি করেছেন, তেহরান ‘কয়েকটি কার্যকর’ প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোর ‘স্ন্যাপব্যাক’ অনুসরণ করা, আইনগতভাবে অকার্যকর, রাজনৈতিকভাবে অদূরদর্শী এবং প্রক্রিয়া কাঠামোর মধ্যে ত্রুটিপূণ। সূত্র:ইউএন, রয়টার্স, এপি, নিউ ইয়র্ক টাইমস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *