ভোরের দূত ডেস্ক: কথায় আছে, পুরুষ রাগে হয় বাদশা। তবে বাদশা না হলেও মুন্সিগঞ্জের কামাল হোসেন নামের এক সার্ভেয়ার রাগ আর জেদের বশেই করে বসলেন একেবারে বাদশাহী আয়োজন। পরকীয়ার টানে দেড় মাস আগে স্ত্রী অন্যের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার আঘাত ভুলে গিয়ে তিনি সন্তানকে কোলে নিয়েই হেলিকপ্টারে চড়ে নতুন বিয়ে সেরেছেন। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া ইউনিয়নে এই ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দশ বছর আগে সাথী আক্তার নামের এক নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কামাল হোসেন। দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তানের জন্মও হয়। তবে চলতি বছরের ১০ আগস্ট আচমকাই স্ত্রী সাথী দুই সন্তান রেখে পালিয়ে যান শহরের এক বিবাহিত যুবকের সঙ্গে। এরপরই ভেঙে পড়ে পরিবার। পরে কামাল জানতে পারেন, স্ত্রী তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে তালাক দিয়েছেন।
হঠাৎ এই দুঃখজনক পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে বরং নিজের জীবনকে নতুনভাবে গড়ার সিদ্ধান্ত নেন কামাল। জেদের বশে নতুন বিয়ের আয়োজন করেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে ছোট কন্যাকে কোলে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে রওনা হন নতুন শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন স্ত্রীকে নিয়ে একই হেলিকপ্টারে ফেরেন নিজ বাড়িতে।
এ বিষয়ে কামাল হোসেন বলেন,
“আসলে পুরুষ নির্যাতনের কথা কেউ ভাবে না। আমার আর্থিক কোনো অভাব ছিল না। কাজের কারণে দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকতাম। সেই সুযোগেই স্ত্রী অন্য ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, মুন্না নামের এক যুবকের সঙ্গে চলে গেছে। এই আঘাত আমাকে দমাতে পারেনি, বরং নতুন বিয়ের সাহস জুগিয়েছে।”
তিনি আরও জানান,
“আমার নতুন স্ত্রীর পরিবার সবকিছু জেনেই বিয়েতে রাজি হয়েছে। স্ত্রীও সন্তানসহ আমার পরিবারের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক। তাই তাকে চমক দেখাতেই হেলিকপ্টার ভাড়া করেছি। আজ নতুন বউ ঘরে তুলেছি। সবার কাছে দোয়া চাই, যেন নতুন জীবন শান্তিতে কাটাতে পারি।”
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, ভেতরের কষ্টকে প্রশমিত করতেই এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কামাল। অনেকে মনে করছেন, সাবেক স্ত্রীকে বোঝাতেই তিনি দেখাতে চেয়েছেন—পুরুষের জীবনও থেমে থাকে না।
অন্যদিকে হেলিকপ্টারে চড়ে বরের আগমন দেখতে আশপাশের শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। পুরো এলাকায় দিনভর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সার্ভেয়ার কামাল হোসেন।