ভোরের দূত ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জব্দের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে দেশটিতে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠাচ্ছে দুদক।
দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সম্পত্তি জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুদকের নথি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জয়ের নামে যেসব সম্পদ ও সম্পত্তি পাওয়া গেছে তার বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:
জয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে দুটি বাড়ি রয়েছে, যার মোট মূল্য প্রায় ৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকা:
প্রথম বাড়ি: ভার্জিনিয়ার গ্রেট ফলস এলাকায় অবস্থিত। ২০২৩ সালের ৩ জুন এর মূল্য নির্ধারিত হয় ৩৮ লাখ ৭৯ হাজার ৫৬০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা)।
দ্বিতীয় বাড়ি: ভার্জিনিয়ার ফলস চার্চ এলাকায় অবস্থিত। ২০১৪ সালের ৫ মে এর মূল্য ছিল ৯ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭৫ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা)।
দুদকের তদন্তে আরও যেসব অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে:
গাড়ি: অন্তত আটটি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে, যার মধ্যে কিছু সাবেক স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওয়াজেদের নামে নিবন্ধিত। গাড়িগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯২৪ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি টাকা)। আদালত এসব গাড়ি জব্দের অনুমোদন দিয়েছেন।
ব্যাংক হিসাব ও কোম্পানি: যুক্তরাষ্ট্রে জয়ের নামে অন্তত ১২টি ব্যাংক হিসাব এবং ছয়টি কোম্পানি রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: গোল্ডেন বেঙ্গল প্রডাকশন্স এলএলসি, প্রাইম হোল্ডিং এলএলসি, ওয়াজেদ ইন অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনার্স এলএলসি, ব্লু হ্যাভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, ট্রুপে টেকনোলজিস এলএলসি
দুদক জানায়, এসব ব্যাংক হিসাবের মধ্যে সাতটি কোম্পানির নামে এবং পাঁচটি ব্যক্তিগত হিসাব, যার একটি সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে খোলা হয়েছে।
দুদকের নথিতে আরও বলা হয়েছে, গত ১৪ আগস্ট সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ৬০ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে একটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, ২০০০ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন এবং অবৈধ পথে বিদেশে পাচার করেছেন।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, মামলার তদন্ত চলমান আছে এবং তদন্ত কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আরও সম্পদ জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।