ভোরের দূত ডেস্ক: আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি এতটাই দয়ালু যে, কিছু বিশেষ মুহূর্ত ও স্থান নির্ধারণ করেছেন যেখানে বান্দার দুআ নিশ্চিতভাবে কবুল হয়। আমরা যদি এই সময়গুলোতে আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর কাছে দুআ করি, তবে আমাদের চাওয়া-পাওয়া বিন্দুমাত্রও ব্যর্থ হবে না।
পবিত্র কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত এমনই ৩৩টি গুরুত্বপূর্ণ সময় ও স্থান সম্পর্কে জানা যায়।
দুআ কবুলের বিশেষ ১৬টি সময় হলো-
১.সফরের সময়ে মুসাফিরের দোয়া (তিরমিযি ৩৪৪৮, বায়হাকি ৩/৩৪৫)
২. আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় (তিরমিজি ৩৫৯৪)
৩. সালাতের সিজদার মধ্যে (মুসলিম ৪৮২)
৪. সালামের আগে ও পরে দোয়া (নাসাঈ ১৩০০)
৫.রাতের শেষ তৃতীয়াংশে (তাহাজ্জুদের সময়) (তিরমিযী ৩৪৯৯, বুখারী ১১৪৫)
৬.যিকির করার পর দোয়া (বুখারী ৬৪০৮)
৭.বৃষ্টির সময় (আবু দাউদ ৩০৭৮)
৮জুমার দিনে আসর থেকে মাগরিবের মধ্যে (বুখারী ৬৪০০)
৯. বুধবার যোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময় (আদাবুল মুফরাদ ৭০৪)
১০. সুরা ফাতিহা ও সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠের পর (মুসলিম ১৭৬২)
১১. দুয়া ইউনুস পাঠের পর দোয়া (তিরমিযি ৩৫০৫)
১২. ইসমে আযম পাঠের পর দোয়া (আবু দাউদ ১৪৯৩)
১৩. ইফতারের সময় (সিলসিলাতুস সহিহাহ ১৭৯৭)
১৪.যমযম পানি পান করার সময় (ইবনে মাজাহ ৩০৬২)
১৫.আযানের সময় (আবূ দাউদ ২৫৪০)
১৬. লাইলাতুল কদরের রাতে দোয়া (বুখারী ও মুসলিম)
এছাড়া দুআ কবুলের ১৭টি বিশেষ স্থান ও অবস্থা রয়েছে। যেমন-
১. কোনো অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দুআ (মুসলিম ৬৮২২)
২. জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের দোয়া (তিরমিযি ৩৪৪৮)
৩. মা-বাবার সন্তানের জন্য দুআ (তিরমিযি ৩৪৪৮)
৪.নেককার সন্তানের বাবা-মায়ের জন্য দুআ (আবু দাউদ ২৮৮০)
৫.আরাফাতের ময়দানে দুআ (তিরমিযি ৩৫৮৫)
৬.বিপদগ্রস্ত ও অসহায় ব্যক্তির দুআ (নামল ৬২, ইসরা ৬৭)
৭. সিজদার মধ্যে দুআ (নাসাঈ ১০৪৫)
৮. হজ্জের স্থানসমূহে দুআ (আরাফাহ, মুজদালিফা, মিনা) (ইবনে মাজাহ ২৮৯২)
৯. হাজীর দুআ (ইবনে মাজাহ ২৮৯৩)
১০. উমরাহকারীর দুআ (নাসাঈ ২৬২৫)
১১. ক্বিতালের (জিহাদের) সময় দুআ (আবু দাউদ ২৫৪০)
১২. ফরয সালাতের শেষ অংশে দুআ (তিরমিযি ৩৪৯৯)
১৩.ন্যায়পরায়ণ শাসকের দুআ (তিরমিযি ২৫২৬)
১৪. রোজাদারের দুআ (ইবনে মাজাহ ১৭৫২)
১৫. কোনো ভালো কাজের ওসীলা দিয়ে দুআ (বুখারী ২২১৫)
১৬. কোনো দুঃখ-কষ্টে আল্লাহর কাছে দুআ করা (সূরা আনআম ৬৩)
১৭.সত্যিকারের অনুতপ্ত অন্তরের দুআ (তিরমিযি ৩৫৫৬)
দুনিয়াতে দুআর চেয়ে শক্তিশালী কিছু নেই। যে ব্যক্তি একাগ্রচিত্তে, হৃদয়ের গভীর থেকে আল্লাহর কাছে হাত তোলে, আল্লাহ কখনো তাকে নিরাশ করেন না। হয় দুআ সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়, নয়তো এর বিনিময়ে কোনো বিপদ দূর করা হয়, অথবা তার জন্য আখিরাতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার সংরক্ষণ করা হয়।
তাই দুআর এই মূল্যবান মুহূর্তগুলো যেন আমাদের হাতছাড়া না হয়। বেশি বেশি দুআ করি, আল্লাহর কাছে নিজেদের সকল প্রয়োজন ও চাওয়া-পাওয়া নিবেদন করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।