পাহাড়ি জনপদ। চারপাশে সবুজে ঘেরা ছোট্ট একটি গ্রাম। সরল জীবন, সীমিত চাহিদা—তবুও উৎসবের আগমনে সেখানে জেগে ওঠে নতুন প্রত্যাশা। দুর্গাপূজা মানেই আনন্দ, রঙিন পোশাক আর হাসিমুখের সমারোহ। কিন্তু দুর্গম এলাকায় বসবাসরত অনেক শিশুর কাছে নতুন জামাকাপড় যেন এক অদেখা স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকেই এবার বাস্তবে রূপ দিল দেশীয় সনাতনী রক ব্র্যান্ড “প্রণাম”। টি-শার্ট বিক্রির একটি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার করে ৪০ জন শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হলো নতুন জামাকাপড়। উৎসবের আগেই ছড়িয়ে পড়ল আনন্দ আর হাসির বন্যা। পাহাড়ের এই শিশুদের হাসির গল্প তুলে ধরলেন অর্ণব দাশ।
অন্যরকম টিশার্ট ক্যাম্পেইন
প্রণামের উদ্যোগকে অনন্য করেছে এদের ভাবনা। এটি কেবল একটি টিশার্ট কেনা-বেচার বিষয় নয়। প্রতিটি টিশার্ট যেন মানুষের আস্থা, ভালোবাসা আর সহমর্মিতার প্রতীক। যারা টি-শার্ট কিনেছেন, তারাই মূলত এই আনন্দের নির্মাতা। আয়োজকদের ভাষায়—“আমরা শুধু সেতুবন্ধন করেছি, আসল অবদান তাদের।”
শিশুদের অমূল্য হাসি
যখন পোশাক হাতে পেল শিশুরা, তাদের চোখে-মুখে যে উচ্ছ্বাস ফুটে উঠল, তা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। কেউ নতুন জামা গায়ে দিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছে, কেউ খালি মাঠে ছুটছে আনন্দে, আবার কেউ অবাক দৃষ্টিতে জামাটির রঙ আর নকশা দেখছে। সেই মুহূর্তগুলো যেন পাহাড়ি গ্রামে উৎসবের আগে উৎসব এনে দিল। একজন অভিভাবক বলেন, “এমন দিনে সন্তানের হাতে নতুন জামা পৌঁছাবে, ভাবতেই পারিনি।” এ উপহার আমাদের কাছে আশীর্বাদের মতো।”
মহালয়ার প্রতিশ্রুতি
এখানেই শেষ নয়। প্রণাম ব্র্যান্ড ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে নতুন পরিকল্পনার। আসছে মহালয়ার দিনে আরও বড় আকারে আয়োজন করা হবে আরেকটি ক্যাম্প। সেখানে ৮০ জন শিশুর হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখা হচ্ছে। আয়োজকেরা আশা করছেন, সমাজের সহযোগিতা আগের মতোই পাশে থাকবে।
ঐক্যের বার্তা
সনাতনী সমাজের প্রবীণরা মনে করছেন, এমন উদ্যোগ সমাজে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে দেয়। তাদের মতে, উৎসবের আলো শুধু শহরের সাজসজ্জায় সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং তা ছড়িয়ে পড়া উচিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের মুখের হাসিতেও। প্রণামের এই পদক্ষেপ সেই ভাবনাকেই বাস্তব রূপ দিয়েছে।