মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, ঠাকুরগাঁও: দেশে আজ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে। বক্তব্য দেওয়া সকলের অধিকার হলেও সেটি যদি দেশের পরিস্থিতিকে অস্বাভাবিক করে তোলে, স্বৈরাচারী পরিবেশ সৃষ্টি করে— তবে তা কোনোভাবেই মঙ্গলজনক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে দীর্ঘ ৮ বছর পর আয়োজিত জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন না হবে, ততদিন বিএনপির আন্দোলন চলবে। গণতন্ত্র পূর্ণতা না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। ৩১ দফার আলোকে জীবন বাজি রেখে দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, দেশে জবাবদিহি ও নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষকে গুম, খুন ও হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হয়েছে। মেগা প্রকল্পের নামে হয়েছে মেগা দুর্নীতি। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচন আমরা যত সহজ ভাবছি, ততটা সহজ নয়। জনগণকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করতে হবে। যতদিন মানুষের অধিকার ফিরিয়ে না আনা যায়, ততদিন বিএনপির আন্দোলন থামবে না। এটিই আমাদের অঙ্গীকার।
সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা করছে। জাতি যখন নির্বাচনমুখী, তখনই এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তিনি বলেছেন, আল্লাহ ছাড়া কেউ তাকে এই প্রক্রিয়া থেকে সরাতে পারবে না। এজন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, গণহত্যা করেছেন, টাকা চুরি করেছেন, এখনো ক্ষমা চাননি। যদি গণপিটুনি শুরু হয়, তাহলে ঘর থেকে বের করে এনে জনতার আদালতে বিচার হবে। নতুন সরকার এলে এসব বিচার কার্যকর হবে। এছাড়া সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু। বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনসহ অনেকে।
প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম। দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। সম্মেলনে সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মির্জা ফয়সল আমিন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন পয়গাম আলী।