নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সরকারের মন্ত্রী এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জন্য ব্যয়বহুল গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তে সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা কৃচ্ছ্রসাধনের পরিপত্র লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রমতে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রস্তাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি এবং নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য আরও ২২০টি গাড়ি কেনার অনুমোদন দিয়েছে। এতে মোট ২৮০টি গাড়ি কেনা হবে, যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ৮ জুলাই জারি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কেবলমাত্র ১০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ির পরিবর্তে নতুন গাড়ি কেনার অনুমতি ছিল। কিন্তু মন্ত্রীদের জন্য কেনা গাড়ি ৯ বছরের পুরোনো হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত সরাসরি পরিপত্রের লঙ্ঘন বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “পরবর্তী সরকারের মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, সেই সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উচিত নয়। এটি তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।” তিনি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানান।
মন্ত্রীসভার জন্য কেনা প্রতিটি মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের গাড়ির দাম পড়ছে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। অন্যদিকে, নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য ১৯৫টি পাজেরো জিপ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য ২৫টি মাইক্রোবাস কেনা হচ্ছে। প্রতিটি জিপের দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং মাইক্রোবাসের দাম ৫২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে গাড়ি কেনার জন্য ৩২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, ২৮০টি গাড়ি কিনতে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাড়তি ৯৬ কোটি টাকা অন্য খাত থেকে মেটানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে নেওয়া হলো যখন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকার কৃচ্ছ্রসাধনের ওপর জোর দিচ্ছে এবং জনগণের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এ ধরনের ব্যয়বহুল সিদ্ধান্ত জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।