ভোরের দূত ডেস্ক: নিউইয়র্ক, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫: ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং তোবগে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলকে সংযুক্ত করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
আলোচনায় তোবগে বলেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি)’ এবং বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে যুক্ত করা গেলে দুই দেশই ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সব সম্ভাবনা কাজে লাগানো উচিত। তিনি বলেন,
“বাংলাদেশ ও ভুটান উন্নত সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে পারে।”
এ সময় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় পর্যটনকে উৎসাহিত করার পরিকল্পনার কথাও জানান। তিনি উল্লেখ করেন, প্রাচীনকালে বাংলাদেশ থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ভুটানে গিয়ে ধর্ম প্রচার করেছিলেন।
এছাড়া ভুটান তার জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা ভাগ করে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পকে বিনিয়োগে আমন্ত্রণ জানায়। পাশাপাশি দেশটিতে ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সহায়তাও চান তোবগে।
আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও মতবিনিময় হয়। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভুটান অংশ নেবে।
প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন “সুরক্ষিত হাতে” রয়েছে। তিনি প্রফেসর ইউনূসকে নিজের “রোল মডেল” আখ্যা দিয়ে স্নেহভরে সম্বোধন করেন “মাই প্রফেসর” হিসেবে।
তবে ৯ সেপ্টেম্বর থিম্পুতে উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশাকেও তিনি প্রশংসা করেন। ভবনটির মূল ভাবনা ছিল “হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর”।
বৈঠকে প্রফেসর ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তোবগে তা গ্রহণ করে ইঙ্গিত দেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের আগেই তিনি সফরটি করতে পারেন।