ভোরের দূত ডেস্ক: অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মন্তব্য করেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে সংস্কার নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও, এই সংস্কারগুলো আসলে কোন জায়গায় এবং কীভাবে হবে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, একমাত্র সংবিধান নিয়ে সংস্কারের কিছু সুনির্দিষ্ট আলোচনা দেখা গেছে। কিন্তু এর বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে সংস্কারের কোনো প্রকৃত উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। তিনি বিশেষ করে নদী রক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগের অভাবের কথা উল্লেখ করেন:
“নদী নিয়ে তো কোনো সংস্কার কমিশনই হয়নি। অথচ নদী হচ্ছে আমাদের অস্তিত্বের অংশ এবং অস্তিত্বই থাকবে না যদি নদী না থাকে।”
এই অর্থনীতিবিদ অভিযোগ করেন, সরকার নদী নিয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি। তার মতে, সরকারের একটি সহজ কাজ ছিল নদী নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের সংযুক্ত করা এবং ১৯৯৭ সালের আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করা। তিনি মনে করেন, ভারত যেহেতু এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি, তাই বাংলাদেশের এটি করা উচিত।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মনে করেন, নদীর পানিবণ্টনে ভারত কখনোই বহুপক্ষীয় আলোচনায় অংশ নিতে আগ্রহী হয় না। অন্যদিকে, বাংলাদেশও দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গিয়ে তেমন লাভবান হতে পারেনি। তিনি সমুদ্রসীমানা নির্ধারণে আন্তর্জাতিক আইনের সহায়তায় বাংলাদেশের সাফল্যের উদাহরণ টেনে বলেন, নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে বাংলাদেশকে বিকল্প পথ খুঁজতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, আন্তনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরেও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে এবং ভারতের জনগণই এর শিকার। এমনকি ভারতের মধ্যেই এখন ফারাক্কা বাঁধ ভাঙার আওয়াজ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ পরামর্শ দেন যে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের মধ্যেকার বিভিন্ন বাঁধবিরোধী মানুষের সঙ্গে সংহতি ও যোগাযোগ স্থাপন করে ভারতের শাসক শ্রেণির ওপর চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।