আমিনুল ইসলাম খন্দকার, বান্দরবান: বান্দরবানে ধর্মীয় দেশনা ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল থেকে বিহারে বিহারে ছোয়াইং দান সমবেত প্রার্থনা ও ধর্মীয় দেশনায় অংশ নেন বৌদ্ধ ধর্মালম্বী তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষ।
প্রবারণাকে ঘিরে পাহাড়ি পল্লী গুলোতে চলছে নানা আয়োজন। এই প্রবারণা পূর্ণিমাকে বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় মাহাঃ ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ নামে উদযাপন করে আসছে। ধর্মীয় ও সামাজিক এই উৎসবকে ঘিরে আনন্দ উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে বান্দরবানে।
জানা গেছে, প্রবারণা পূর্ণিমা পালন বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম উৎসব। প্রতি বছর এ দিনটি সকল বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এদিকে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকে বান্দরবানের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে বিহারে জাতীয় পতাকা, ধর্মীয় পতাকা ও ধজা উত্তোলন, চলছে ধর্মীয় দেশনা, ভিক্ষুদের উদ্দেশ্যে অর্থ ও অন্নদান, ফুল পূজা আর উপাসক-উপাসিকারা গ্রহণ করছে অষ্টশীল। বিহারে বিহারে চলছে ধর্মীয় দেশনা ও জগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা। বিহারে বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী ও পুরুষেরা উপস্থিত হয়ে সুখ:শান্তি লাভ ও পারিবারিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনায় জড়ো হচ্ছে।
দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসিকারা মোমবাতি, ধুপকাঠি প্রজ্জলন আর বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং (বিভিন্ন ধরনের খাবার) প্রদান করে দিনটি উদযাপন করছে। এসময় বিহারে পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন, উজানীপাড়া মহা বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত ড. সুবন্নলংকারা মহাথের, রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত উ: কেতু মহাথের, আবাসিক ভিক্ষু ভদন্ত নন্দশ্রী ভিক্ষু।
আজ সোমবার ( ৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হবে মঙ্গল রথযাত্রা, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উত্তোলন। আর মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে রথ নিয়ে বান্দরবান পাড়া প্রদক্ষিণ শেষে শঙ্খ নদীতে রথ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসব।
এদিকে উৎসবকে ঘিরে বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতির জেলা বান্দরবান। এ উৎসবকে ঘিরে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী ও পর্যটক আসবেন। তাদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।