ভোরের দূত ডেস্ক:
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেটা রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টার (METRICS) কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বের ‘শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষক’ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন মাভাবিপ্রবির তিন শিক্ষক ও দুই শিক্ষার্থী। গবেষণা প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, উদ্ধৃতি (citation) ও অন্যান্য প্রভাব সূচক বিশ্লেষণ করে জন পি. এ. ইয়োনিডিস এবং তার দলের দ্বারা এই তালিকাটি প্রস্তুত করা হয় এবং এটি আন্তর্জাতিক জার্নাল এলসেভিয়ারে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত তালিকায় ক্যারিয়ার-লম্বা (Career-Long) মূল্যায়নে মোতােমুটি পুরো পেশাগত জীবনের অবদানের ভিত্তিতে দুটি নাম উঠে এসেছে। সেগুলো হলো ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন (আইসিটি) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাউছার আহমেদ এবং সহকারী অধ্যাপক বিকাশ কুমার পাল। অন্যদিকে এক বছরের (Single-Year) ওপর ভিত্তি করে করা পৃথক মূল্যায়নে তালিকাভুক্ত হয়েছেন আইসিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলী নেওয়াজ বাহার এবং আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ সেন, পাশাপাশি বিএমবি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মেহেদী।
তালিকা তৈরির পদ্ধতি ও যুগপৎ মূল্যায়ন সম্পর্কে বলা হয়েছে, এখানে গবেষকদের প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা, সেই কাগজে পাওয়া উদ্ধৃতি, গবেষকের এইচ-ইনডেক্সসহ একাধিক পরিমাপকেই বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গবেষণাগুলোকে ২২টি বড় বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র ও ১৭৪টি উপ-ক্ষেত্রে শ্রেণিবদ্ধ করে দুটি ভাগে সেরা গবেষক নির্ধারণ করা হয়েছে—একটি পুরো কর্মজীবনভিত্তিক (Career-Long) এবং আর একটা সাম্প্রতিক বছরের (Single-Year) অবদানের ওপর। তাই এই তালিকায় স্থান পাওয়া মানে কেবল এক-একটি সফল গবেষণাপত্র নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রকাশ ও গ্রহণযোগ্যতার স্বীকৃতি।
এ প্রসঙ্গে মাভাবিপ্রবি গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল নাসির জানান, “আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই সাফল্য মাভাবিপ্রবির জন্য এক অনন্য গর্বের অর্জন। এটি প্রমাণ করে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের এই তালিকায় আসা আমাদের ভবিষ্যৎ গবেষণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।” তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পরিবেশ ও সহায়ক কাঠামো উন্নত রাখলে ভবিষ্যতে আরও বেশি গবেষক ও ছাত্র–ছাত্রী এমন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করবে বলে তার বিশ্বাস।
এই সাফল্যের তাৎপর্য অনেকস্তরে বিবেচিত হতে পারে—প্রথমত, আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠা মানে গবেষণার মান ও প্রভাব আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃত; দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি গবেষণা তহবিল, সমবায় উদ্যোগ বা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আকর্ষণের একটি সুবিধা হয়ে দাঁড়ায়; আর তৃতীয়ত, এটি শিক্ষার্থী ও নবীন গবেষকদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জাগিয়ে দেবে এবং মাভাবিপ্রবির একাডেমিক মর্যাদা শক্তিশালী করবে।
উপসংহারে বলা যায়, জন পি. এ. ইয়োনিডিসের এই তালিকাভুক্তি মাভাবিপ্রবির জন্য কেবল একটি সম্মান না—এক ধরনের প্রমাণও যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও গবেষকগণ আন্তর্জাতিক মানে প্রাসঙ্গিক এবং তাদের কাজ বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, গবেষক ও শিক্ষার্থী সবাই যদি একযোগে গবেষণা ও সহযোগিতাকে আরো উৎসাহিত করে তোলেন, তাহলে ভবিষ্যতে এই ধরণের আরও সম্মান মাভাবিপ্রবির কাছে আসা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।