ভোরের দূত ডেস্ক: নাটোরের সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া পি.জি.ডি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম ও সামগ্রিক পরিবেশ চরম অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছে। জানা গেছে, গত তিন মাসে প্রধান শিক্ষক মাত্র সাত দিন বিদ্যালয়ে হাজির হয়েছেন।
বিদ্যালয়ের চারতলা আধুনিক ভবন বাইরে থেকে আকর্ষণীয় হলেও ভেতরে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতির কারণে:
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দশম শ্রেণির ২৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল মাত্র ৬ জন, আর নবম শ্রেণির ৩৩ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৩ জন। শিক্ষকরাও মনমতো আসা-যাওয়া করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিয়মিত সমাবেশ হয় না এবং শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষক ছাড়া পাঠদান ভালো হয় না। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহমদুল্লাহ ওরফে সুমন বলেন, “এক সপ্তাহ ও পনের দিন পরপর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। এই কারণে পাঠদানও ভালো হয় না।”
ক্লাসরুমে ধুলা-ময়লার স্তূপ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ আসছে। দামি টেবিল-চেয়ার চতুর্থ তলার হলরুমে ধুলায় নষ্ট হচ্ছে।
ল্যাবরেটরি ও কম্পিউটার কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।
সহকারী প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান এই দুরবস্থার জন্য প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি এবং বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মী, আয়া, নিরাপত্তা কর্মী ও অফিস সহায়ক না থাকাকে দায়ী করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদ আলী মুঠোফোনে তার অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে ৩০ বছরের কর্মজীবনে হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাকে উল্লেখ করেন। তবে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করেন।
আওয়ামী লীগের কতিপয় দোসররা বিদ্যালয়কে নষ্ট করছে এবং তারা তার কথা শোনেন না।
বজলুর রহমান জাল কাগজপত্র তৈরি করে জোর করে সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েছেন এবং এখন তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন না করে মিথ্যা রটাচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, তার প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষক শফিকুল ইসলামের নিবন্ধন সনদপত্রটিও জাল, যার কারণে প্রতিষ্ঠানে মাঝেমধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়ে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) জানান, এসকল বিষয় তার জানা নেই। তিনি জেনে সকল বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলামও বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।