ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়

অপরাধ

ভোরের দূত ডেস্ক: গাজীপুরে ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী মোকসেদ আলী (৫৮) ইসলামী ব্যাংক শ্রীপুর উপজেলার মাওনা শাখার জেনারেল ব্যাংকিং ইনচার্জ এবং ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এফএভিপি)। তিনি পরিবারের সঙ্গে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করেন।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। অফিস শেষে বাসায় ফেরার জন্য মোকসেদ আলী মাওনা চৌরাস্তার উড়াল সেতুর উত্তর পাশে পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় একই স্থানে আরও দুজন যাত্রীও গাড়ির অপেক্ষায় ছিলেন। কিছুক্ষণ পর একটি সাদা প্রাইভেটকার এসে দাঁড়ালে চালক যাত্রী তুলতে শুরু করেন। ভাড়া নির্ধারণের পর মোকসেদ আলীও তাদের সঙ্গে গাড়িতে ওঠেন। তিনি মাঝখানে বসলে অপর দুই যাত্রী দুই পাশে বসে পড়েন। গাড়ি গাজীপুরের দিকে রওনা হওয়ার পরপরই তারা আচরণে সন্দেহজনক হয়ে ওঠেন।

গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকা অতিক্রম করার সময় যাত্রীরা হঠাৎ করে মোকসেদ আলীর চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলেন এবং তাকে মারধর শুরু করেন। পরে তারা বাসায় কারা আছে জানতে চান। ভুক্তভোগী জানান, বাসায় তার স্ত্রী আছেন। তখন অপহরণকারীরা ফোনে তার স্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। প্রথমে ৬০ হাজার টাকা ও পরে আরও ৩০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়।

অপহরণকারীরা মুক্তিপণ আদায়ের পর মোকসেদ আলীর দুটি মোবাইল ও নগদ সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সিডস্টোর এলাকার জঙ্গলে তাকে ফেলে যায়। সেখান থেকে বাঁধন খুলে এক অটোচালকের সহায়তায় তিনি মহাসড়কে ফিরে আসেন এবং রাত ১২টার দিকে পাবলিক বাসে করে গাজীপুরের বাসায় পৌঁছান।

ঘটনা প্রসঙ্গে মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি আইয়ুব আলী জানান, প্রথমে এ বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না। তবে পরে বিষয়টি জেনে তিনি বিস্তারিত খোঁজ নেন। শ্রীপুর থানার ওসি মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, “ঘটনার রাতেই আমরা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম। শুনেছি ভুক্তভোগী নিজে বাসায় ফিরে গেছেন। এখনো তিনি লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনায় স্থানীয়রা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, মহাসড়কে যাত্রীবাহী প্রাইভেটকারে এ ধরনের অপহরণ জননিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *