মুহাম্মদ ফয়সাল, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার হাজিগাঁও এলাকায় বিলের মাঝখানে দিনের বেলায়ই ঘুরে বেড়াচ্ছে এক বা একাধিক বন্য হাতি। কখনো শান্তভাবে জলাশয়ে বিচরণ, কখনো আবার ফসলি জমি ও বসতবাড়িতে প্রবেশ—যা স্থানীয়দের কাছে একইসাথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আবার ভয় ও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আতঙ্কে স্থানীয়রা: স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন—হাতি যদি শুধু বিলের ভেতর থাকে তবে সেটি প্রকৃতির সৌন্দর্য বলেই মনে হয়। কিন্তু হঠাৎ করে যখন হাতি গ্রামে ঢুকে পড়ে, ফসল নষ্ট করে কিংবা বসতভিটা তছনছ করে, তখন সেটি জীবন-জীবিকার জন্য হুমকি হয়ে ওঠে। অনেক কৃষক জানান, রাতে ফসল পাহারা না দিলে পুরো জমির ধান বা সবজি এক রাতেই শেষ হয়ে যায়।
বন বিভাগ বলছে—হাতির প্রাকৃতিক বিচরণপথ দখল হয়ে যাওয়ায় তারা এখন বসতভিটা ও বিল এলাকায় চলে আসছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে সচেতনতা কার্যক্রম, ক্ষতিপূরণ এবং হাতি প্রতিরোধক দল গঠন করা হলেও মাঠপর্যায়ে এখনও কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন—পাহাড়ি বনভূমি ধ্বংস, হাতির খাদ্যের অভাব এবং মানুষ-প্রাণীর সংঘাত প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি—এসবই এর জন্য দায়ী।
স্থানীয়দের মতামত অনুযায়ী—হাতিকে কষ্ট না দিয়ে দূরে সরানোর পদ্ধতি, রাত-দিন পর্যবেক্ষণ টিম, এবং অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদ উচ্ছেদ জরুরি। দীর্ঘমেয়াদে হাতির জন্য নির্দিষ্ট চলাচলের পথ তৈরি ও বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার ছাড়া এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
ফলশ্রুতিতে প্রশ্ন থেকেই যায়—হাজিগাঁওয়ের বিলের এই হাতি কি প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতীক, নাকি মানুষের জন্য এক অশান্ত হুমকি?