ভোরের দূত ডেস্ক: বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে কৃষি জমি। নগরায়ন, শিল্পায়ন এবং অপরিকল্পিত আবাসন ব্যবস্থার কারণে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আবাদি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে দেশের আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমেছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জের মতো শিল্পোন্নত এলাকায় কৃষিজমি হ্রাসের হার সবচেয়ে বেশি।
কৃষিবিদরা বলছেন, নতুন নতুন আবাসন প্রকল্প, রাস্তাঘাট নির্মাণ, ইটভাটা এবং বিভিন্ন শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য কৃষিজমি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে নদীভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং জলাবদ্ধতাও কৃষিজমি হ্রাসের অন্যতম কারণ।
এদিকে, কৃষি জমি কমার পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদনও সমান তালে বাড়ছে না। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে হলে একদিকে যেমন কৃষি জমির সুরক্ষা প্রয়োজন, অন্যদিকে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত বীজ ব্যবহার অপরিহার্য।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার কৃষি জমি সুরক্ষায় বিভিন্ন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কৃষিজমিকে অকৃষি খাতে রূপান্তর করা বন্ধ করতে হবে। একইসাথে, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সীমিত জমিতে বেশি ফসল ফলানোর দিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা দিয়ে কৃষিখাতকে আরও লাভজনক করতে হবে।