গ্রামে হিমাগার স্থাপনে নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

জাতীয়

ভোরের দূত ডেস্ক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের গ্রামীণ এলাকায় হিমাগার সুবিধা স্থাপনে নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই সহায়তা নষ্ট হতে থাকা কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে ক্ষুদ্র কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি কমাতে সাহায্য করবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই সহায়তা কামনা করেন।

ড. ইউনূস ডাচ প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বাংলাদেশ দ্রুত ফল ও শাকসবজি উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হচ্ছে। তবে ফসলের মৌসুমে অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে পণ্যের দাম হঠাৎ কমে যায়, যার ফলে লাখ লাখ ক্ষুদ্র কৃষক মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকায় স্বল্পমেয়াদি হিমাগার সুবিধার অভাবে তারা উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণ করতে পারছেন না।

নেদারল্যান্ডসকে কৃষি প্রযুক্তিতে বিশ্বনেতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের প্রয়োজন আপনার দেশের আধুনিক প্রযুক্তি, যাতে আমরা আমাদের ফল ও শাকসবজি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে পারি। এ ছাড়া, আপনারা চাইলে আমাদের কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার জন্য গবেষক ও বিজ্ঞানী পাঠাতে পারেন।” তিনি উল্লেখ করেন যে, প্রতি বছর বাংলাদেশে শুধু সংরক্ষণের অভাবে হাজার হাজার টন ফল ও শাকসবজি নষ্ট হয়।

প্রধান উপদেষ্টা নেদারল্যান্ডসের পানি ব্যবস্থাপনা, নদী ব্যবস্থাপনা ও সামুদ্রিক প্রযুক্তিতে নেতৃত্বের প্রশংসা করে জলবায়ু ও পানি ব্যবস্থাপনা, সমুদ্র গবেষণা এবং বাংলাদেশের নদীগুলোকে নৌগমনযোগ্য রাখার ক্ষেত্রে সহযোগিতা চেয়েছেন।

বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময়ে ভুয়া নির্বাচন হয়েছে, এবং বর্তমানে আগের শাসকদের ঘনিষ্ঠরা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

ড. ইউনূস তার সরকারের পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ প্রধান উপদেষ্টার উত্থাপিত বিষয়গুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং জানান যে তিনি বিষয়গুলো পর্যালোচনা করবেন। তিনি বস্ত্রখাতেও সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোকে গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “এর বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।”

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *