সম্পাদকীয়: রবিউল আউয়ালের ১৯তম দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

সম্পাদকীয়

মো: আব্দুর রহমান প্রামাণিক: আজ পবিত্র শুক্রবার, আরবি মাস রবিউল আউয়ালের ১৯ তারিখ। ইসলামী ইতিহাসে রবিউল আউয়াল মাসের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। এই মাসেই মানবজাতির জন্য রহমত হয়ে আগমন করেছিলেন সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আবার একই মাসেই তিনি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন এবং ইন্তেকালও করেন। তাই রবিউল আউয়ালকে বলা যায় নবীজীর জীবনঘনিষ্ঠ অধ্যায়ের পূর্ণতা লাভের মাস।

ইতিহাস ও মূল ঘটনাবলি:

১. নবীজীর জন্ম
১২ রবিউল আউয়াল মুসলিম উম্মাহর কাছে এক আনন্দের দিন। এ দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিশ্বমানবতার মুক্তিদাতা, যিনি অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজে সত্য, ন্যায় ও মানবিকতার আলো জ্বালিয়েছিলেন।

২. হিজরত
এই মাসেই নবী (সা.)-এর হিজরত সংঘটিত হয়, যা ইসলামী ইতিহাসে এক মোড় ঘুরিয়ে দেয়। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত শুধু স্থান পরিবর্তন ছিল না, বরং ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা ও উম্মাহর ভিত্তি স্থাপনের সূচনা। হিজরি ক্যালেন্ডারও এ ঐতিহাসিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে শুরু হয়েছে।

৩. ইন্তেকাল
নবী (সা.)-এর ইন্তেকালও এই মাসেই ঘটে। জন্মের আনন্দ আর মৃত্যুর বেদনা মিলেমিশে রবিউল আউয়াল মুসলিমদের কাছে হয়ে উঠেছে চিরস্মরণীয় মাস। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, তবে আদর্শ চিরন্তন।

আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষা:

সীরাতুন্নবী অধ্যয়ন করে জীবনে বাস্তবায়ন করা।

সুন্নাহর আলোকে জীবন গড়ে তোলা।

দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানবসেবায় এগিয়ে আসা।

সমাজে ন্যায়বিচার ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

মৃত্যুর শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্দেশ্যমূলক জীবন৷  যাপন করা।

আধুনিক প্রাসঙ্গিকতা: আজকের বিশ্বে বিভাজন, নৈতিক অবক্ষয় ও মানবিক সংকট সর্বত্র দৃশ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে রবিউল আউয়ালের শিক্ষা আমাদের আহ্বান জানায়—

নবীজীর আদর্শের আলোকে ঐক্যবদ্ধ হও।

দান ও সাহায্যের চর্চা বাড়াও।

সমাজে ন্যায় ও মানবিকতার জয়গান করো।

রবিউল আউয়ালের ১৯তম দিনটি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার স্মারক না হলেও, পুরো মাসের মাহাত্ম্য আমাদের নবীজীর জন্ম, হিজরত ও ইন্তেকালের শিক্ষা স্মরণ করিয়ে দেয়। এ দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক— আমরা নবীজীর আদর্শ ধারণ করব, ন্যায় ও মানবিকতার আলো ছড়াব এবং উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করব।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *