মাসুম পারভেজ: কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মা ও মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় জট খুলেছে। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, জিন তাড়ানোর নাম করে বাসায় ঢুকেই তাদের হত্যা করেন কবিরাজ মোবারক হোসেন (২৯)।
নিহতরা হলেন—সুজানগর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম এবং তাঁর মেয়ে সুমাইয়া আফরিন, যিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার পর নিহতের ছেলে তাজুল ইসলাম ফয়সাল অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন পুলিশ নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে মোবারককে গ্রেপ্তার করে। তিনি মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে এবং বাবুস সালাম জামে মসজিদের খাদেম। পাশাপাশি কবিরাজি কাজও করতেন।
পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, তাহমিনা বেগম মাঝেমধ্যে ঝাড়ফুঁকের জন্য ওই মসজিদের খতিবের কাছে যেতেন। সেই সূত্রে মোবারকের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং এক মাস ধরে তাঁর বাসায় যাতায়াত করতেন তিনি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে তাহমিনা বেগম মেয়ের জিন তাড়ানোর জন্য মোবারককে বাসায় ডাকেন। এ সময় সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তাহমিনা বাধা দেন। তখন মাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে, পরে মেয়েকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে মোবারক। ঘটনাস্থল থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালান তিনি।
পুলিশের একাধিক ইউনিট তদন্তে নামে এবং পাশের একটি স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মোবারককে শনাক্ত করে। ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে একাই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছেন মোবারক। তবে তদন্ত চলছে, অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।