পাবনার তিন স্থাপনা বিশ্ব দরবারে সেরা

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইতিহাস ও ঐতিহ্য

সোহেল রানা, পাবনা সদর: পাবনা জেলার পাশ দিয়ে পদ্মা নদী বয়ে গেছে। পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে গেলেই দেখা মিলবে বড় বড় চুল্লীর। একটু সামনে গিয়ে লালন শাহ্ ও হার্ডিঞ্জ ব্রীজ। ছুটির দিনে উৎসবের সময় রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, লালন শাহ্ সেতু পাশে ট্রেন চলাচলের জন্য রয়েছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: পদ্মার তীরে দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের জন্য সরকার পাবনা ঈশ্বরদীর রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । ২০১৭ সালের ৩৯ নভেম্বর ১,১৩,০৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হয় বর্তমান কাজ চলমান। চাপ যুক্ত জল চুল্লী সরবরাহ করেছেন রেসাটম কোম্পানি। কুলিং উৎস’র জন্য পদ্মা নদী চিহ্নিত করা হয়েছে।

তবে ১৯৬১ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ করেন করে এবং ১৯৬২ সালে পাবনা জেলার পাকশী ইউনিয়নের রুপপুর পদ্মা নদীর তীরে থান নির্বাচন করে। পরবর্তীতে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত বাতিল করে।

এরপর ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কংক্রিট ঢালা কাজের উদ্বোধন করেন। রাশিয়ার সহযোগিতায় দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর জমি ও আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।

পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ: পাবনা জেলার ইশ্বরদী উপজেলায় পাকশী ইউনিয়নের পদ্মা নদীর উপর ১৫ টি স্প্যানের নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পাবনার ইশ্বরদী উপজেলার পাকশী ও কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারাকে সংযুক্ত করেছে। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১.৮ কিলোমিটার। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নাম অনুসারে এই সেতুর নামকরণ করা হয়। ১৯০৯ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

লালান শাহ সেতু: কুষ্টিয়ার বিখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র নামে সেতুটির নামকরণ করা হয়। এই সেতুটি পাবনা জেলা ও কুষ্টিয়া জেলাকে একত্রে করেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে দুই জেলার মধ্যে। লালন শাহ সেতুর ১৭ টি পিলার রয়েছে। সেতুটির ফলে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চূরাডাঙ্গা জেলার যাতায়াত সহজ হয়েছে। ২০০৪ সালের ১৮ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উদ্বোধন করেন।

ঐতিহ্যবাহী পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মানদীর পাশেই ও ব্রিজ দুইটি নদীর বুকের উপর দিয়ে চলে গেছে। এই সুন্দর দৃশ্য দেখতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও ধর্মীয় উৎসবের ছুটির সময় পর্যটকদের উপস্থিতি হয় চোখে পড়ার মতো। নদীর শীতল হাওয়া, নৌকা ভ্রমণ, একসাথে নদী থেকে দেশের সেরা তিন স্থাপনা দেখার জন্য পর্যটকরা প্রায় বছরের সব সময় আসতেই থাকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *