আবিদুল ইসলাম খান: ডাকসু নির্বাচনে ২১ নম্বর ব্যালটে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী

রাজনীতি

ভোরের দূত ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (জেডিসিডি) প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে মনোনীত হয়েছেন আবিদুল ইসলাম খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ঢাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ব্যালট নম্বর ২১ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রাজনৈতিক পরিচিতি ও নির্বাচনী পটভূমি

আবিদুল ইসলাম খান দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় এবং ছাত্রদলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে আসছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি শিক্ষার্থীদের বাসস্থান সংকট, নিরাপদ ক্যাম্পাস, মানসম্মত শিক্ষা এবং কল্যাণমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।

নির্বাচনী ইশতেহার

ডাকসু নির্বাচনে আবিদুল ইসলাম খান ও তার প্যানেল একটি বিস্তারিত ইশতেহার ঘোষণা করেছে। এর প্রধান অঙ্গীকারগুলো হলো:

  • শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন।
  • নিরাপদ ও মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
  • শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা।
  • ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
  • শিক্ষার্থীদের জন্য সামাজিক ও অবকাঠামোগত সংস্কার সাধন।

তাদের ইশতেহারে গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদকের পদটি ইচ্ছাকৃতভাবে শূন্য রাখা হয়েছে, যা জুলাই আন্দোলনে আহত সানজিদা আহমেদ তন্বীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের এক পরিচিত মুখ

২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসের শিক্ষার্থী বিক্ষোভে মো. আবিদুল ইসলাম খান একজন সক্রিয় নেতা হিসেবে ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছেন। এই আন্দোলনকে সুসংগঠিত এবং শান্তিপূর্ণ রাখতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আন্দোলনের সময় তার দেওয়া বক্তব্যগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে, তার বলা “প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না” শীর্ষক একটি উক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ইউটিউবে এই বক্তব্যটির ভিউ সংখ্যা ২৪ লাখেরও বেশি। একটি গবেষণা অনুযায়ী, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৯৮ শতাংশই তার এই বক্তব্যের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।

আবিদুল ইসলাম খান তার রাজনৈতিক দর্শনে শিক্ষার্থীদের মূল সমস্যাগুলো, যেমন— আবাসন সংকট এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস-এর মতো বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসেন। ৫ আগস্টের এক সমাবেশে তার ভাষণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অনুপ্রেরণা জোগায়।

নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি

আবিদুল ইসলাম খান নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ অনড় থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি জোর দিয়েছেন। ১ সেপ্টেম্বর তিনি বলেন, “আপনারা কি তামাশা করেন, নির্ধারিত সময়েই ডাকসু নির্বাচন হতে হবে।” তার এই বক্তব্য স্বচ্ছ ও সময়মতো নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি তার দৃঢ় অবস্থানকে তুলে ধরে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

আবিদুল ইসলাম খান নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেবেন। তার প্যানেল তরুণ ও অভিজ্ঞ নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত, যারা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী।

এই নির্বাচনে ভিপি পদে মোট ৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, এবং আবিদুল ইসলাম খান ছাত্রদলের একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তার নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রতিশ্রুতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশা জাগিয়ে তুলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *