মতিন গাজী, যশোর: সরকারি বিদ্যালয়ের গাছও রেহাই পেল না দুর্বৃত্তদের হাত থেকে! যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের খন্দকারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিরিষ গাছের লাক্ষা পোকা লুটপাটের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নাম উঠে এসেছে।
গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার পরপরই হযরত আলি (সাবেক মেম্বার ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি), হুমায়ুন মোল্যা, আলতাপ হোসেন (সভাপতি প্রার্থী কৃষক দল) ও মোস্তফা সরদার (সাধারণ সম্পাদক, বিএনপি ওয়ার্ড কমিটি) নেতৃত্বে প্রকাশ্য দিবালোকে গাছ থেকে কেটে ৭–৮ ভ্যান ডালপালা নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয়রা দ্রুত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু মুতালেবকে ফোনে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়িকে পাঠান। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সব দেখেশুনে নির্বিকারভাবে ফিরে আসে। উল্টো তারা বলে, “টেন্ডার নেওয়া হয়েছে।” অথচ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বিষয়ে কোনো টেন্ডার আহ্বানই করা হয়নি।
সাবেক প্রধান শিক্ষিকা রেবেকা খাতুনের বক্তব্য, “অনেকদিন ধরে বিএনপির কিছু লোক ভাইরাস (লাক্ষা পোকা) নিয়ে টানাহেঁচড়া করছে।” বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বীকার করেছেন ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে রেজুলেশন দেখিয়ে ভাইরাস বিক্রি করা হয়েছে। অথচ উপজেলা শিক্ষা অফিসার পুরো বিষয়টিই জানতেন না। বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে তড়িঘড়ি করে ভুয়া রেজুলেশন বানানোর চেষ্টা শুরু হয়, যেখানে কমিটির অনেকেই স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান।
গণনা অনুযায়ী, ৮ ভ্যান ডাল থেকে প্রায় ১২০ কেজি লাক্ষা পোকা সংগ্রহ হয়েছে। বাজারদর প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা হিসেবে প্রায় ৯০ হাজার টাকার ভাইরাস হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুধু তাই নয়, অযথা গাছের ডালপালা কেটে নেওয়ায় বিদ্যালয়ের শিরিষ গাছগুলো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন বিদ্যালয়ের সম্পদ লুটপাট হলে শিক্ষা প্রশাসন আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তখন কী করছে?