ভোরের দূত ডেস্ক: দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি দল আজ রবিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক বৈঠক করেছেন। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং তাদের প্রধান উদ্বেগগুলো বিএনপি নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।
বৈঠকে অংশ নেন পোশাক শিল্প, বাণিজ্য ও শিল্প খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা, যাদের মধ্যে ছিলেন: মাহমুদ হাসান খান (সভাপতি, বিজেএমইএ), কামরান তানভিরুর রহমান (সভাপতি, এমসিসিআই), একে আজাদ (সাবেক সভাপতি, এফবিসিআই), আহসান খান চৌধুরী (প্রধান, প্রাণ গ্রুপ), এম এ হাতেম (সভাপতি, বিকেএমইএ)
বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান যে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, এই মুহূর্তে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) গ্র্যাজুয়েশন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য সহায়ক হবে না। তিনি বলেন, বিগত দিনের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য যে পরিসংখ্যানগুলো দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে এই গ্র্যাজুয়েশন স্থগিত রাখা জরুরি।
তিনি আরও জানান, ব্যবসায়ীরা বর্তমান সরকারকে জাতিসংঘে একটি চিঠি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন, যাতে জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসে বর্তমান পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন।
শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে উদ্বেগ
শ্রম আইন সংশোধন প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য ২০ জন শ্রমিকের আবেদনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করে এই পরিবর্তন আনা হলে শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে কিনা বা ইউনিয়নগুলো কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে কিনা, তা বিবেচনা করা দরকার।
বিজেএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, তাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ দুটি—এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন স্থগিত রাখা এবং শ্রম আইন সংশোধন। তিনি জানান, শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে ১২৪টি পয়েন্টের মধ্যে ১২২টিতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য ২০ জন শ্রমিকের আবেদনের বিষয়টি নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে রাতারাতি ‘ব্যাঙের ছাতার মতো’ হাজার হাজার ট্রেড ইউনিয়ন তৈরি হবে, যা শিল্পের জন্য মারাত্মক হুমকি। তিনি আরও জানান, এই বিষয়টি তারা বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কারণ তিনি জাতিসংঘের বৈঠকে যোগ দেবেন।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, তারা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন স্থগিত নয়, বরং মাত্র তিন বছরের জন্য পিছিয়ে দিতে চান, কারণ বাংলাদেশ এখনও প্রস্তুত নয়। তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে ভুল তথ্য (ফলসিফাইড ডেটা) এবং অপ্রস্তুত অবকাঠামো অন্যতম কারণ।