ভোরের দূত ডেস্ক: আসামের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ-এর প্রতি সম্মান জানিয়ে তার জীবন ও কর্ম এবার ঠাঁই পেতে চলেছে ১৪টি ভিন্ন ভাষার পাঠ্যপুস্তকে। ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় এমন স্বীকৃতি অর্জন এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। জুবিন গার্গের জীবনীর অংশবিশেষ আসামের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসাম বিদ্যালয় শিক্ষা পরিষদ। এই ঘোষণা জুবিন গার্গের বাসভবন কাহিলিপাড়ায় দেওয়া হয়।
ইন্ডিয়া টুডে (নর্থ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জুবিন গার্গের জীবনী আধুনিক ভারতীয় ভাষা (এমআইএল) পাঠ্যক্রমে ১৪টি প্রধান ভারতীয় ভাষায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে করে আসামসহ সারা দেশের শিক্ষার্থীরা জুবিন গার্গের অসাধারণ জীবনযাত্রা, শিল্পীসত্তা এবং মানবতার দর্শনের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।
এদিকে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর, আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় যে, গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় এই শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের সেন্টার ফর পারফরর্মিং আর্টস অ্যান্ড কালচারের নাম পরিবর্তন করে তারা জুবিন গার্গের নামে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে জুবিন গার্গের একটি মূর্তি স্থাপন করা হবে, যাতে তার উপস্থিতি ভবিষ্যৎ ছাত্র-ছাত্রী ও আগত শিল্পীদের অনুপ্রেরণা যোগাতে পারে। তার সংগীত জীবন ও অর্জন নিয়ে একটি কফি টেবিল বইও প্রকাশ করা হবে। তাছাড়া জুবিন গার্গের সম্মানে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আন্তঃকলেজ যুব উৎসবে ‘জুবিনের গান’ নামে একটি নতুন বিভাগ চালু করবে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন প্রতিভাবানদের উৎসাহিত করা হবে, জুবিনের অমর সংগীত পরিবেশন এবং তার শিল্পসত্তাকে এগিয়ে নিতে।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, জুবিন গার্গ শুধু একজন সফল শিল্পীই নন, তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছেও একজন অনুপ্রেরণা। সঙ্গীতের প্রতি তার গভীর নিষ্ঠা, অসমীয়া সংস্কৃতিকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরা এবং সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে তার অংশগ্রহণের মতো বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবে।
১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জুবিন গার্গ। তিনি একাধারে ছিলেন গায়ক, সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, সংগীত প্রযোজক, অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত যুব মহোৎসব পাশ্চাত্য একক পরিবেশনায় স্বর্ণপদক লাভ করার পর জুবিনের জীবন বদলে যায়। ১৯৯২ সালে অসমিয়া অ্যালবাম ‘অনামিকা’ মুক্তির মাধ্যমে জুবিন পেশাদার সংগীত জগতে প্রবেশ করেন। ২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমায় ‘ইয়া আলি’ গান গেয়ে তাক লাগিয়ে দেন জুবিন। তারপর বেশ কয়েকটি সুপারহিট গান উপহার দেন তিনি। পরে বলিউডে খুব একটা কাজ করতে দেখা যায়নি তাকে। তবে আসামের আঞ্চলিক সংগীত নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন এই শিল্পী।