উপন্যাস-ভূত পেত্নীর কান্ড
লেখক: জার্নালিস্ট পারভেজ
আমি পেশায় একজন সাংবাদিক। সংবাদ সংগ্রহের কাজে আমাকে প্রায়ই রাতবিরাতে বাইরে যেতে হয়। কোনো নির্দিষ্ট সময় বা দিন নেই—ঘটনা যেখানে, আমাকে সেখানে পৌঁছাতে হয়। এক রাতে রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। হঠাৎ রাত এগারোটায় কল আসে, পাশের গ্রামে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ সংগ্রহ করতে আমাকে সেখানে যেতে হবে।
মোটরসাইকেলে তেল না থাকার কারণে রিক্সা করে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। সংবাদ সংগ্রহ করতে করতে রাত ১২টা পার হয়ে যায়। এবার বাড়ি ফেরার পালা। দূর্ঘটনা স্থানের কাছ থেকে আমার বাড়ি প্রায় ১০ কিমি দূরে। এত রাতে কোনো যানবাহন পাওয়া যায় না। তাই আমি শর্ট রুট বেছে নিয়ে হেটে যাত্রা শুরু করি। পথের মাঝপথে একটি জনমানবশূন্য খাল, খাল পের হলে বাঁশঝাড়, আর বাঁশঝাড় পার হলে বাড়ি।
হেটে যাওয়ার শুরুতেই অদ্ভুত এক অসস্তি অনুভব করি। খাল পার করতে পারি, তবে চারপাশে ভারী আবহাওয়া, এবং মনে হয় আশেপাশে কেউ আছে। বাঁশঝাড়ে ঢুকতেই শরীর শিউরে ওঠে। আমি আস্তে আস্তে এগোই। ঠিক তখনই মাঝপথে হঠাৎ একটি বাঁশ মাটিতে হেলে পড়ে। আমি দাঁড়িয়ে যাই, কারণ শুনেছি এই ধরনের জায়গায় অতর্কিত যাতায়াত বিপজ্জনক। পেছনের দিকে হাটার চেষ্টা করলে আরেকটি বাঁশ হেলে পড়ে। তার উপরে যেন কিছু বসে আছে, স্পষ্ট বোঝা যায় না।
ভয় আরও বেড়ে যায়। ভিডিও করার চেষ্টা করলেও ক্যামেরা চালু হয় না। হাতের ডানদিকে পাচ-ছয় বিঘা জমির মাঝে একটি বাড়ি দেখতে পাই, সাহায্যের জন্য যেতে চাই, কিন্তু ডান দিকে তাকাতেই দেখি সাদা শাড়ি পরা কেউ দাঁড়িয়ে আছে। বাঁশঝাড়ের মাঝখানে আগুন জ্বলছে। চারপাশে ভয়াবহ পরিবেশ, শরীর ঘাম ও কাঁপা। ২৫ মিনিট অতিবাহিত হয়, তারপর ভয় আরও বাড়ে।
হঠাৎ চোখে জল আসে। দোয়া ও দরুদ পড়তে শুরু করি। এক ঘণ্টা পেরোতেই কানের কাছে মেয়ের কণ্ঠ শুনি, “তুমি চিন্তা করো না, আমি এদের দেখছি।” পাশে তাকিয়ে দেখি পরীর মতো একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
সকালে জ্ঞান ফিরে দেখি আমার পাশে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে। জানতে পারি, ফজরের নামাজের জন্য যাওয়া কয়েকজন আমাকে পল/খড়ের মধ্যে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে এসেছে। খবর ছড়িয়ে পড়ায় মানুষজন আমাকে দেখার জন্য এসেছে।
লেখক নোট: ঘটনা সত্যি। অনেকেই ভূতের অস্তিত্বকে বিশ্বাস না করলেও, যারা এমন পরিস্থিতি ভোগ করেছে, তারা এর গভীর শিহর অনুভব করতে পারে।