নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সরকার প্রায় ১০৬ কোটি মার্কিন ডলারের কঠিন শর্তের বিদেশি ঋণ নিয়ে সাতটি বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিদেশি সহায়তা অনুসন্ধান কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে ঋণের সুদের হার কমানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হয়। এতে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় উপস্থাপিত মোট ৩৬টি ঋণনির্ভর প্রকল্পের মধ্যে প্রাথমিক অনুমোদন পায় মাত্র ৭টি। এর মধ্যে কয়েকটি চীনের ঋণ ও অনুদাননির্ভর হলেও অধিকাংশ প্রকল্পই নন-কনসেশনাল বা কঠিন শর্তের ঋণে বাস্তবায়িত হবে।
অনুমোদিত ৭ প্রকল্প
রাজধানীর পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন
সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার (ফেইজ-৩): ব্যয় ১৬,০০০ কোটি টাকা; ঋণ দেবে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (ইআইবি) ১১,৪৪৮ কোটি টাকা।
ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প: ব্যয় ১০,৯৭৩ কোটি টাকা; ঋণ দেবে ইআইবি ৬৭৪ কোটি টাকা।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের পাঁচটি জলবায়ু সহনশীল সেতু নির্মাণ
ব্যয় ৩,৭৪৫ কোটি টাকা; ঋণ দেবে ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) ২,৮৫০ কোটি টাকা।
উত্তরাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন
চট্টগ্রাম–দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর
ব্যয় ১০,৭৯৭ কোটি টাকা; ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৭,০০০ কোটি টাকা।
খুলনার পানি সরবরাহ দ্বিতীয় পর্যায়
ব্যয় ২,৫৯৮ কোটি টাকা; ঋণ ১,৮২১ কোটি টাকা।
নেসকো এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ উন্নয়ন
ব্যয় ১,১৮৪ কোটি টাকা; ঋণ ৯৬৫ কোটি টাকা।
কঠিন শর্তের ঋণ কেন?
নন-কনসেশনাল বা কঠিন শর্তের ঋণ সাধারণত বাজারভিত্তিক সুদে দেওয়া হয়। এতে পরিশোধের মেয়াদও সংক্ষিপ্ত এবং রেয়াতকাল তুলনামূলক কম। জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো খাতে সহজ শর্তের ঋণ পাওয়া যায় না বলেই সরকার বাধ্য হচ্ছে এ ধরনের ঋণ নিতে।
বাংলাদেশ এখন মধ্যআয়ের দেশ হওয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কনসেশনাল ঋণের প্রবাহও ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিদেশি ঋণের একটি বড় অংশ এসেছে কঠিন শর্তের ঋণ থেকে।