‘বাজার সয়লাব’ ঠেকাতে আরও পণ্যে শুল্ক বসালেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক

ভোরের দূত ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে আরও কিছু বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার দাবি, বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণে এসব পণ্য আসায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উৎপাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুরোধ সত্ত্বেও প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প নতুন শুল্কের ঘোষণা দেন। এই শুল্কগুলো হলো: ওষুধ আমদানি, কোনো কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়ে না তুললে, ওই কোম্পানির ওষুধ আমদানিতে শতভাগ শুল্ক আরোপিত হবে। ভারী ট্রাক, সব ধরনের ভারী ট্রাকে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতাদের ‘অন্যায্য বিদেশি প্রতিযোগিতা’ থেকে রক্ষা করবে এবং পিটারবিল্ট ও ম্যাক ট্রাকস্-এর মতো কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে। ক্যাবিনেট ও আসবাবপত্র, রান্নাঘর ও বাথরুমের ক্যাবিনেটে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া, আগামী সপ্তাহ থেকে সোফা ও অন্যান্য গদিযুক্ত আসবাবপত্রে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তার শুল্ক নীতির আরও সম্প্রসারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং স্থানীয় উৎপাদকদের বৈদেশিক আমদানি থেকে রক্ষা করা।

তবে এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক মহল এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

ব্যবসায়িক উদ্বেগ: চলতি বছরের শুরুতে ইউএস চেম্বার অব কমার্স হোয়াইট হাউসের কাছে নতুন শুল্ক আরোপ না করার আহ্বান জানিয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল, ট্রাক উৎপাদনে ব্যবহৃত অনেক যন্ত্রাংশ মেক্সিকো, কানাডা, জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং জাপান থেকে আসে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ। তারা সতর্ক করে বলেছে যে এই যন্ত্রাংশগুলো দেশীয়ভাবে উৎপাদন করা বাস্তবসম্মত নয় এবং এর ফলে শিল্পখাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক প্রভাব: ট্রাম্পের এই নীতি ইতিমধ্যে ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এই একতরফা শুল্ক আরোপের কারণে কানাডা এবং ইইউ-এর মতো দীর্ঘদিনের বাণিজ্য অংশীদাররা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংযোগের জন্য বিকল্প খুঁজতে পারে, এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রকে আর নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক মিত্র হিসেবে দেখবে না।

আইনি বিতর্ক: ভিন্ন দেশের ওপর ‘ট্যারিফ’ বা শুল্ক আরোপ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ট্রাম্প জরুরি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আপিল আদালত রায় দিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে তার এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নয়া রাজস্ব নীতির সুবিধা মিলবে এবং মার্কিন পণ্য কেনার পরিমাণ বাড়বে। তবে এই সব পদক্ষেপের নেতিবাচক পরিণতি দেখা যেতে পারে কিনা, তা আগামী বছরগুলোতে স্পষ্ট হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *