আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সুপেরিয়ার রেসপন্সিবিলিটির মামলায় ৪৭তম সাক্ষীর শেষ দিনে তিনি এই জবানবন্দি দেন। সকাল সোয়া ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল।
নাহিদ ইসলাম তার জবানবন্দিতে বলেন, “গত বছর ৫ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে আমরা সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি এবং অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলাম। আমরা স্পষ্ট জানিয়েছিলাম যে কোনো ধরনের সেনাশাসন বা সেনা সমর্থিত শাসন আমরা মেনে নেব না।”
তিনি অভিযোগ করেন, গণঅভ্যুত্থান চলাকালে পুলিশ ও বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের দায়ী করেন। তার মতে, ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটানো হয়েছিল।
নাহিদ ইসলাম জানান, তারা বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছিলেন যে আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার ও নেথাল ওয়েপন (ঘাতক অস্ত্র) ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের কঠোর শাস্তির প্রার্থনা জানান।
তিনি আরও বলেন, “পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা গত বছরের ৪ আগস্ট শাহবাগে অবস্থান ও বিক্ষোভ করি। সেদিনই ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তবে সরকার কারফিউ জারি করে দেশজুড়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালালে আমরা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করি।” তিনি জানান, সেদিন মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের হত্যা বা গুম করার আশঙ্কা ছিল, যে কারণে তারা কর্মসূচি এগিয়ে নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর নাহিদের জবানবন্দি শুরু হয়েছিল, যা শেষ না হওয়ায় আজকের জন্য মুলতবি করা হয়েছিল।