৯ অক্টোবরের মধ্যে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির আলটিমেটাম বাঙলা কলেজ গনতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের

পড়াশোনা

ভোরের দূত প্রতিবেদক: শিক্ষার মানোন্নয়ন, মেধাভিত্তিক নিয়োগ এবং গবেষণায় পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দসহ আট দফা দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, সরকারি বাঙলা কলেজ সংসদ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে দাবিগুলোকে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে ১২ অক্টোবর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি শুরু হবে।

২০২৫ সালের ২ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে এসব দাবি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার লক্ষ্যে এ আট দফা উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রথম দাবিতে বলা হয়, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়োগে কেবল মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতাকে মানদণ্ড করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক প্রভাব বা কোটা পদ্ধতি কার্যকর করা যাবে না। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও মেধা ও অভিজ্ঞতাকে একমাত্র ভিত্তি ধরা উচিত। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রশাসনিক পদে নিয়োগেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দাবিতে সরকারি বাংলা কলেজের ঐতিহ্যকে সামনে রেখে একটি স্বতন্ত্র ‘বাংলা ভাষা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়। এতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য গবেষণার পাশাপাশি ডিজিটাল আর্কাইভ, আধুনিক গবেষণা অবকাঠামো ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাকে বিশ্বদরবারে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার কথা বলা হয়।

তৃতীয় দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের ন্যূনতম ২৫ শতাংশ গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখার দাবি জানানো হয়। সংগঠনটির মতে, গবেষণায় বিনিয়োগ ছাড়া বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

চতুর্থ দাবিতে শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক ও ছাত্রবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এতে হলের সিট, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরিসহ সব সুবিধা নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখার নির্দেশনা অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট সময়সূচিও দাবি করা হয়।

পঞ্চম দাবিতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট ও সরকারি অনুদান প্রদানের কথা বলা হয়। ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শিক্ষক সংকট নিরসন এবং প্রয়োজনে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানানো হয়।

ষষ্ঠ দাবিতে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক সহায়তার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও সনদ প্রদানের বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলা হয়। একই সঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদানে কোনো জটিলতা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সপ্তম দাবিতে আবারও মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

অষ্টম দাবিতে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়। সংগঠনটির মতে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র হলো ছাত্র সংসদ, যা শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশ ও অধিকার আদায়ের অন্যতম মাধ্যম। ইতিহাসের উদাহরণ টেনে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি ছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তাই প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ছাত্র সংসদ গঠনের বিষয়টি নতুন ধারা হিসেবে যুক্ত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জানায়, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত স্বার্থ ও আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের জন্য এ দাবিগুলো অপরিহার্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিলে একটি গণতান্ত্রিক ও আধুনিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *