পাকিস্তানি ট্যাংকারে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা

আন্তর্জাতিক

ভোরের দূত ডেস্ক: আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলের একটি ড্রোন হামলায় পাকিস্তানি ক্রু বহনকারী একটি বাণিজ্যিক তেল ট্যাংকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও এই হামলার স্থান এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক বিবরণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তবে প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে যে, জাহাজটিতে পাকিস্তানি নাবিকরা কর্মরত ছিলেন। চলতি মাসের শুরুতে তেলবাহী ওই ট্যাংকরাটি ইয়েমেনের একটি বন্দরে নোঙর করা ছিল। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা সংস্থা এবং সংবাদ সূত্র জানিয়েছে, জাহাজটি সম্ভবত হরমুজ প্রণালী বা এডেন উপসাগরীয় অঞ্চলে হামলার শিকার হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বা সরকারের পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি। পাকিস্তানি নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে তারা জাহাজে কর্মরত ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখছে বলে জানা গেছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি এখনো। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিগত মাসগুলোতে লোহিত সাগরে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে হুতি ও ইসরায়েল। তেমন কোনো হামলার শিকার হয়ে থাকতে পারে পাকিস্তানি ক্রুবাহী ওই ট্যাংকারটি।

এদিকে, গত শনিবার পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, ওই ট্যাংকারে ২৭ জন আরোহী ছিলেন, তাদের মধ্যে ২৪ জনই পাকিস্তানি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মহসিন নাকভি লেখেন, ‘একটি এলপিজি ট্যাংকার, যেটিতে ২৭ ক্রু (ক্যাপ্টেন মুখতা আকবরসহ ২৪ পাকিস্তানি, দুজন শ্রীলঙ্কান এবং একজন নেপালি) ইসরায়েলের ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে। ট্যাংকারটি রাস আল-এসা বন্দরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর হামলার কবলে পড়ে।’ তিনি আরও জানান, ড্রোন হামলার পর জাহাজটির একটি এলপিজি বিস্ফোরিত হওয়ার পর এতে আগুন ধরে যায়। যা ক্রুরা নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর ইয়েমেনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতিরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ক্রুদের জিম্মি করে। পরবর্তীতে তারা ক্রুদের ছেড়ে দেয়।

সাম্প্রতিক সময়ে এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা বেড়েছে। বিশেষ করে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে ছায়াযুদ্ধের অংশ হিসেবে এই ধরনের আক্রমণ বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেও এই অঞ্চলে ইসরায়েল-সম্পর্কিত জাহাজ এবং ইরান-সম্পর্কিত ট্যাংকারগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে।

এই হামলার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। একইসাথে, এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *