সম্পাদকীয়: পিতা-মাতা সন্তানের জীবনের প্রথম শিক্ষক। সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হলে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সুপরামর্শের বিকল্প নেই। সন্তানের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা রক্ষার জন্য পিতা-মাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা রয়েছে।
প্রথমত, সন্তানদের সাথে সদয় ও শুভাচারসম্পন্ন আচরণ করুন। ভালো আচরণ শিশুদের আত্মবিশ্বাস ও সঠিক মূল্যবোধ গঠনে সহায়ক। পাশাপাশি, তাদের জন্য পর্যাপ্ত সময় বের করুন। ব্যস্ততার মধ্যে ছোট্ট মুহূর্তগুলোতে সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানো তাদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সন্তানের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। তাদের অনুভূতি ও ভাবনাকে গুরুত্ব দেওয়া তাদেরকে মূল্যবান মনে করায়। একই সঙ্গে, কান-কথায় রাগ বা হুমকি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। রাগে নেওয়া সিদ্ধান্ত বা কথার প্রভাব সন্তানের ওপর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যায়ভাবে দোষ চাপানোও শিশুর মনোবল হ্রাস করে, তাই ভুল হলে সহানুভূতিপূর্ণভাবে বোঝান।
পিতা-মাতার উচিত সন্তানের সামনে এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকা যা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া, সন্তান জন্মের আগে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা জরুরি। শিক্ষা ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; বাকিটা আল্লাহর হাতে। যদি সন্তান ভালো কোনো কাজ করতে চায়, তাদের উৎসাহ দিন, বাধা দেবেন না। এছাড়া, সন্তানের সামনে কখনো ঝগড়া বা মারামারি করবেন না। পরিবারের শান্তি শিশুদের মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
ভালোবাসা প্রদর্শন করতে শিখুন এবং সন্তানের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন। সন্তানের সঙ্গে পরামর্শ করুন, এতে সম্পর্ক দৃঢ় হয় এবং জ্ঞান ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি পায়। বন্ধু বেছে নিতে সহায়তা করুন, কারণ বন্ধুত্ব শিশুর পরিবেশ ও মানসিকতার ওপর প্রভাব ফেলে। ছেলে-মেয়ে যাই হোক, সন্তান আল্লাহর দান; জন্মের পর কখনো মন খারাপ করবেন না। তাদের স্বপ্ন ও ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করুন।
নিজের ইচ্ছা সন্তানদের ওপর চাপাবেন না এবং তাদের আপত্তি বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবেন না। পরিবারের সঙ্গে জ্ঞানী ও সুপরামর্শী মানুষের সংস্পর্শে থাকুন, এটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হবে। পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর এবং ইতিবাচক রাখুন। সন্তানদের সামনে অশ্লীল বা অকথ্য ভাষা ব্যবহার করবেন না। সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে গুণীজনের পরামর্শ নিন।
সন্তান একটি অমূল্য দান। তাদের মানসিক, নৈতিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য পিতা-মাতার প্রিয়মুখ, সময় এবং ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় উপহার।
লেখক: আরজে মাসুম পারভেজ, প্রধান নির্বাহী,আমার ঠিকানা বাংলাদেশ ইয়ুথ ফাউন্ডেশন।