নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অন্যতম সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকে ঢাকা সেনানিবাসে প্রবেশ করতে দেয়নি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি মিরপুর গেট দিয়ে সেনানিবাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে দায়িত্বরত প্রহরীরা তাকে আটকে দেন। পূর্বে গ্রহণ করা হয়েছে একটি সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবেই শহরের অন্যতম সুরক্ষিত এই এলাকায় তার প্রবেশে বাধা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটে কচুক্ষেত এলাকার কাছে মিরপুর গেট দিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ সেনানিবাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সূত্র জানায়, মিলিটারি পুলিশের সদস্যরা তাকে এই সংবেদনশীল এলাকায় প্রবেশে বাধা দিলে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত বাদানুবাদ হয়। এরপর হাসনাত আবদুল্লাহ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে কল করলেও কোনো ইতিবাচক ফল মেলেনি। মিলিটারি পুলিশের প্রহরীরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন। প্রায় ২০ মিনিট সেখানে অপেক্ষা করার পর হাসনাত আবদুল্লাহ স্থান ত্যাগ করেন।
অবহিত সূত্রমতে, হাসনাত আবদুল্লাহ কোনো সেনা কর্মকর্তার সাথে দেখা করতে নয়, বরং সেনানিবাসের ভেতরের তুলনামূলক যানজটমুক্ত রাস্তা ব্যবহার করে অন্য একটি গন্তব্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে তার সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মূলত তথাকথিত “পরিশোধিত আওয়ামী লীগ” গঠন নিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে একটি কথিত বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য ফাঁস করার পর থেকেই আবদুল্লাহ এবং এনসিপির অন্য নেতাদের (যারা পূর্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মী ছিলেন) ওপর সেনাবাহিনীর শীর্ষ মহল বেশ ক্ষুব্ধ।
আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পেজে দাবি করেছিলেন যে, সেনানিবাসের ভেতরে সেনাবাহিনী প্রধানের সরকারি বাসভবনে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে ছাত্রনেতা সার্জিস আলমসহ তার একটি বৈঠক হয়েছিল। ফেসবুক পোস্টে আরও দাবি করা হয়, সেখানে সাবেক এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন এবং শেখ তাপসের মতো নেতাদের নিয়ে একটি “পরিশোধিত আওয়ামী লীগ” গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। আবদুল্লাহর দাবি অনুযায়ী, ১১ মার্চ বিকেলে সেনানিবাসের ভেতরে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা তাদের সামনে আসন ভাগাভাগি ও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন সংক্রান্ত এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তবে, এই ফেসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী সদর দপ্তর দ্রুত একটি বিবৃতি দিয়ে হাসনাতের দাবি খণ্ডন করে। বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয়ে আবদুল্লাহ বা অন্য কোনো ছাত্র কর্মীকে চাপ দেওয়া হয়নি এবং বৈঠকটি আবদুল্লাহ ও সার্জিস আলমের নিজেদের উদ্যোগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।