বরিশাল প্রতিনিধি: বহু বিবাহ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বরিশাল বন বিভাগের উপ-বন সংরক্ষক মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। মানববন্ধনে থাকা স্ত্রীদের অভিযোগ ওই কর্মকর্তার ১৬ থেকে ১৭ জন স্ত্রী রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর একাধিক স্ত্রী ও স্বজনরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা উপ-বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাকে অপসারণের দাবি জানান।
তারা জানান, থানায়, আদালত ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেও এখনো কোনো প্রতিকার পাননি। একবার দাপ্তরিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হলেও প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় তিনি দ্রুত জামিনে মুক্তি পান।
ভুক্তভোগী নারীরা জানান, তিনি বিভিন্ন জেলায় চাকরি করাকালীন সময় বিভিন্ন নারীকে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করা নারীরা বলেন, ‘আমাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাকে বিয়ে করেন কবির। পরে বিয়ের নাটক ধরা পড়ার পর আমাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেন।’
এক নারী অভিযোগ করেন, ‘আমাকেও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন কবির। পরে তার বিয়ের সময় বাবার সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য দাবি করেন, না হলে আমাকে মারধর করে বের করে দেন।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, কবিরের মোট ১৭ জন স্ত্রী রয়েছে। তারা জানায়, তার সাথে যোগাযোগ না থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মহিলারা জানায়, আগে ঢাকা, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালীন এই ধরনের বিয়ে করেছেন কবির।
নভেম্বরের ১৪ ফেব্রুয়ারি কবির খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের দিন তিনি বাবার সম্পত্তি লিখে দেওয়ার দাবি করেন। তা না মানায়, তাকে বরিশালের সরকারি বাসভবন থেকে বের করে দেন।
খাদিজা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আমাকেও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছেন কবির। পরে বাবার সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তিনি আমাকে নির্যাতন করে বের করে দেন।’
অভিযুক্ত কবির হোসেনের আইনজীবী এনায়েত হোসেন বাচ্চু বলেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নেই। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযুক্ত কবির হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, কবির হোসেনের পূর্বের কর্মস্থলগুলো হলো ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলা। তিনি বিদেশে পড়াশোনা, সরকারি চাকরি, বিমানবালা হিসেবে সুযোগ কিংবা সম্পত্তি দেওয়ার প্রলোভনে নারীদের প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
