কটিয়াদীতে বসেছে ৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট

ইতিহাস ও ঐতিহ্য

আবু সালেহ মোঃ হামিদুল্লাহ, কটিয়াদী(কিশোরগঞ্জ):
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী এ ঢাকের হাট। বাদ্যযন্ত্র না, বাদক বিক্রি হন যে হাটে। বাঙালির উৎসবে বাদ্যযন্ত্রের জুড়ি নেই। ঢাক-ঢোল ছাড়া দুর্গোৎসব ভাবাই যায় না।

বাদ্যের তালে তালে মন্ডপে মন্ডপে নাচ-গান-আরতি আর দেবী বন্দনা দুর্গাপূজার প্রধান অনুষঙ্গ। তাই বাহারি রঙ আর আকারের ঢাক-ঢোল, বাঁশি, খাঁসি, খোলসহ অসংখ্য বাদ্যযন্ত্রের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। বাদ্যযন্ত্রসহ যন্ত্রীরা এসেছেন ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে।

প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো দেশের একমাত্র বাদ্যযন্ত্রের এ হাট সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের দিচ্ছে বাড়তি আনন্দ। দিন দিন দুর্গোৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এ হাট। মজার বিষয় হচ্ছে, এ হাটে কোনো বাদ্যযন্ত্র বিক্রি হয় না। বিক্রি হন যন্ত্রীরা। যন্ত্রীসহ পছন্দের বাদ্যটি ভাড়া হয় এ হাটে। পূজা শুরুর আগে দরদাম ঠিক করে বায়নার টাকা দিয়ে বাদ্যযন্ত্রসহ যন্ত্রীদের সঙ্গে করে নিয়ে যান পূজার আয়োজকরা।

দোকানিরা জানান, হাটে বিক্রি হচ্ছে ভালো। হাতের নাগালে পছন্দের বাদ্যসহ যন্ত্রী পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। একেকজন ঢাকী ১২ থেকে ১৫ হাজার, বাঁশিবাদক ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছেন।

আর ছোট ব্যান্ডদল ১৫ থেকে ২০ এবং ৭/৮ জনের বড় দল ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছেন। প্রায় ৫শ বছর ধরে কটিয়াদীতে বসছে ঢাক-ঢোলের হাট।

কটিয়াদী পূজা উদযাপন পরিষদ ফ্রন্টের আহ্বায়ক দিলীপ সাহা জানান, দুই দিনে দুই শতাধিক ঢাকি দলের সমাগম ঘটেছে এই হাটে। এখানে ঢাকী ছাড়া আর কিছু কেনাবেচা হয় না।

এরইমধ্যে হাটে আসা ঢাকিদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্গাপূজা শুরুর আগের ৩-৫ দিন এ হাট বসে। উল্লেখ্য যে, কটিয়াদী উপজেলায় এবছর মোট ৪৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ও জাকজমকপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ঐতিহাসিক ঢাক-ঢোলের হাটের এবং ঢাকিদের সার্বিক নিরাপত্তাসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কটিয়াদী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *